বিশ্ব ডেস্ক: ভারতের পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক নির্মিত ঐতিহাসিক দিল্লি জামে মসজিদে চারশত বছরের মধ্যে প্রথম একজন অভারতীয় মুসলিম নেতার খুতবা প্রদানের ঘটনা ভারত ও মুসলিম বিশ্বের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের সেক্রেটারি-জেনারেল এবং মুসলিম পণ্ডিতদের সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল-ইসা গত ১৪ জুলাই শুক্রবার দিল্লি জামে মসজিদে জুমার খুতবা দেন।
আরব নিউজের মঙ্গলবার(১৮ জুলাই) প্রকাশিত ” Muslim World League chief’s sermon writes a new page in India’s Jama Masjid’s history” শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,
এটি ছিল ভারতের বাইরের কোনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের ৪০০ বছরের মধ্যে প্রথম বক্তৃতা। দিল্লি জামে মসজিদের ইমামের আমন্ত্রণে তিনি সেখানে যান। শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল-ইসা কে মসজিদের মুসল্লিরা আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান।
ভারতের রাজধানী দিল্লি শহরে অবস্থিত মসজিদ-ই-জাহান নুমা, যা দিল্লি জামা মসজিদ নামে পরিচিত, ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে সুন্দর মসজিদগুলির মধ্যে একটি। ১৬৫৬সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়।
১৬৫০ সালের ৬ অক্টোবর মসজিদ-ই-জাহান নুমা বা দিল্লি জামে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। তৎকালীন ১০লাখ টাকার বাজেটে নির্মিত এর তত্বাবধানে ছিলেন মুঘল শাসক শাহজাহানের প্রধানমন্ত্রী সাদুল্লাহ খান, এবং গৃহ সম্পদ বিভাগের প্রধান ফাজিল খান।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের গবেষক সাদিয়া আজিজ “মসজিদ, স্মৃতি এবং রাজ্য: জামে মসজিদ (ভারত) এবং ঔপনিবেশিক রাজ্যের একটি কেস স্টাডি শীর্ষক প্রবন্ধে ২০১৭ সালে তুলে ধরেন উপরোক্ত তথ্য।
মসজিদটি মুঘল সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক সদ্য প্রতিষ্ঠিত( তৎকালীন) রাজধানী শাহজাহানাবাদে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রাসাদ-দুর্গ লাল কেল্লা থেকে একহাজার গজ দূরে ভোজলা নামক পাহাড়ে নির্মিত হয়েছিল।
মসজিদটির পরিমাপ প্রায় ২৬১ ফুট লম্বা এবং ৯০ ফুট চওড়া, এর ছাদটি কালো এবং সাদা মার্বেলের ডোরা দিয়ে তিনটি গম্বুজ দ্বারা সজ্জিত।
জামে মসজিদের তিনটি প্রবেশদ্বার রয়েছে, উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব । পূর্বের গেট ছিল শাহী গেট সম্রাট, রাজকুমার ও তাদের পরিবার এবং তাদের কর্মচারীদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল।কেবল শুক্রবারই জুমার নামাজের জন্য এ গেট খোলা হত।
মসজিদটি দুটি নামে পরিচিত, যার মধ্যে প্রথমটি সম্রাট কর্তৃক প্রদত্ত রাজকীয় নাম: মসজিদ-ই-জাহান নুমা। “জাহান” অর্থ “বিশ্ব” এবং “নুমা” অর্থ “দৃশ্যমান”, রূপকভাবে, এমন একটি কাঠামো যা সমগ্র বিশ্বের একটি দৃশ্যকে নির্দেশ করে।
দ্বিতীয় নাম, জামে মসজিদ, যার অর্থ “সম্মিলিত বা যে মসজিদে জুমার নামাজ হয়”,যা মানুষের সামাজিক চেতনা থেকে উদ্ভূত এবং সময়ের সাথে সাথে আনুষ্ঠানিক নামের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বিএনএনিউজ, এসজিএন