বিএনএ ডেস্ক: আজ বুধবার (১৭ নভেম্বর) পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারাদেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। গাউসুল আযম বড় পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানি (র.)’র ওফাত দিবস বিশ্বের মুসলমানদের কাছে ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ নামে পরিচিত।
‘ইয়াজদাহম’ ফারসি শব্দ, যার অর্থ এগারো; ‘ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম’ বলতে এগারো’র ফাতিহা শরিফকে বোঝায়। এক কথায় রবিউস সানি মাসের ১১ তারিখের ইছালে সওয়াব মিলাদ মাহফিলকে ‘ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম’ বলা হয়।
তা ফারসি ভাষার প্রভাবে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশসহ আফগানিস্তান, ইরান, বৃহৎ রাশিয়ার মুসলিম-অধ্যুষিত অঞ্চল, ইরাকসহ বিভিন্ন স্থানে ‘ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম’ অর্থাৎ এগারো’র ফাতিহা নামে উদযাপিত হয়ে আসছে।
এই পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম ইমামুল আউলিয়া পীরানে পীর গাউসুল আযম দস্তগীর হযরত মুহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানি (র.)’র স্মরণে পালিত হয়।
ওলিকুল শিরোমণি ১০৭৭ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৪৭০ হিজরির ১ রমজান ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে প্রায় ৪শ কিলোমিটার দূরে জিলান নগরের সুবিখ্যাত সাইয়্যেদ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হযরত সাইয়্যেদ আবু সালেহ মুসা। মাতার নাম উম্মুল খায়ের ফাতেমা। তার বাবার বংশ হযরত ইমাম হাসান (রা.)’র সঙ্গে এবং মায়ের বংশ হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)’র সঙ্গে মিলিত হয়। এ জন্য তাকে ‘আল-হাসানি ওয়া আল-হোসাইনি’ বলা হয়। পিতৃকুল-মাতৃকুল দুই দিক থেকেই হযরত আলী (রা.)’র বংশধর অর্থাৎ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)’র বংশধর।
ইসলামকে নতুন জীবন দেয়ার জন্য পরবর্তী সময়ে হযরত মুহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানি (র.) নামে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। জিলান শহরের অধিবাসী হওয়ার কারণে তার নামের শেষে ‘জিলানি’ উপাধি সংযুক্ত করা হয়েছে।
শৈশব থেকেই অত্যন্ত উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন তিনি। আল্লাহর বাণী ও মিষ্টভাষী বক্তব্য দিয়ে কোটি কোটি মানুষকে ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনেন এবং সমকালীন বিশ্বে আউলিয়া কিরামের ওপর সুউচ্চ মর্যাদা লাভ করেন হযরত বড় পীর (র.)। সারা বিশ্বে তার ভক্ত ও মুরিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে খ্যাতি ছিল। আল্লাহ তাকে সব ওলির চেয়ে অধিক কারামতি দান করেছিলেন। ফলে আল্লাহর দ্বীনকে দুনিয়াতে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন তিনি।
ইসলামের চির আলোকময় পথে আনার জন্য হযরত মুহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানি (র.) অনেক ওয়াজ-নসিহতও করেছেন; যাতে ছিল বিস্ময়কর প্রভাব। তার প্রতিটি কথা মানুষের হৃদয়ে দারুণভাবে গেঁথে যেত।
সারা জীবন পথহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে ১১৬৮ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৫৬১ হিজরির ১১ রবিউস সানি ৯১ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন আল্লাহ প্রেমিক মহান সাধক, ওলিকুল শিরোমণি।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া, বড় পীরের ওফাত দিবসে বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করছে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি