বিএনএ, যশোর: সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় অলি-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অসংখ্য নাম সর্বস্ব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই মানহীন। বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চাহিদার বিদ্যমান নেই এসব প্রতিষ্ঠানের। ফলে নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিকিৎসা পাওয়ার বদলে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
মানুষের মৌলিক চাহিদারগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। সেই মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে শার্শায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর মধ্যে বাগআঁচড়ার মত একটি মফস্বল শহরে প্রায় ৮ থেকে ১০ টা ক্লিনিক- ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকলেও অধিকাংশ মানহীন। নেই নিজস্ব ডাক্তার, নেই পরিশিক্ষিত নার্স, ও দক্ষ টেকনোশিয়ান। এভাবেই উল্টো পথে চলছে বাগআঁচড়ায় স্বাস্থ্যসেবা। সরকারি নীতিমালা অনুসারে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আধুনিক যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষিত নার্স, ও দক্ষ টেকনোশিয়ানসহ সার্বক্ষণিক ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হচ্ছেনা এখানে। যা স্বীকার করেছেন প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা। আবার প্রতিবেদকের ক্যামেরার সামনে অদক্ষদেরই দক্ষ হিসাবে দাঁড় করানোর চেষ্টাও করেছেন তারা। এ সকল নাম সর্বস্ব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। দায়িত্বশীলদের নজরদারির অভাবকে দুষছেন তারা।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, যেকোন ক্লিনিক- ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবশ্যই ডাক্তার, প্রশিক্ষিত নার্স, দক্ষ টেকনোশিয়ান থাকতে হবে। এগুলো না থাকলে রোগীরা মানসম্মত চিকিৎসা পাবে না। এদের মনগড়া রিপোর্ট বেশির ভাগ ভুল বলে মনে করেন এই চিকিৎসক।
এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১০ দফা নির্দেশনা ভঙ্গকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাধারণ মানুষের দাবি, চিকিৎসাসেবার নামে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রতারণা বন্ধে এখনই কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আংশিক অভিযানে বাগআঁচড়া নার্সিংহোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও জনসেবা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ ৩ টি ক্লিনিকে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি পাওয়ার কারণে প্রত্যেকটি ক্লিনিকের প্যাথলজি বিভাগ ও অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। যা মাত্র ১৪ দিন যেতে না যেতে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ যশোর সিভিল সার্ভিস ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাসের দোহাই দিয়ে ওই ক্লিনিকগুলো আবারও খুলে দেয়। আর বাকি ক্লিনিকগুলো অভিযানের আওতামুক্ত থাকে।
বিএনএনিউজ/ বিএম