আদালত প্রতিবেদক: আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরাতে সরকারকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দশ জন আইনজীবী। সোমবার (১৬ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আইন সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, দেশের সিংহভাগ আইন ও আদালতের ব্যবস্থা এবং অবকাঠামো ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি। আদালতে আসামি হাজিরার জন্য কাঠগড়ার প্রচলন ব্রিটিশ আমলেই শুরু হয়। তবে দুর্ধর্ষ আসামি, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ডান্ডা-বেড়ী পরিয়ে আদালতে হাজির করানো হত। বিচার শেষে দোষীকে লোহার খাঁচায় বন্দী করে রাখা হয়েছে এমন ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু বিচার চলাকালীন আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দী করে রাখার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না। ভারতেও সাধারণ আদালতের কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহার নেই। আমাদের দেশের কোনো আইনে কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহার নিয়ে কোন বিধান নেই। তবে কারা আইন, ১৮৯৪ এর ৫৬ ধারা মতে জেলে বন্দী কয়েদীকে সরকারের অনুমোদনক্রমে লৌহ-শৃঙ্খলে আটক করে রাখার বিধান রয়েছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই অভিযুক্তকে প্রকাশ্য আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দী করে অভিযুক্ত ব্যক্তির (নির্দোষিতার অনুমান) ভঙ্গ করা হচ্ছে। যা একই সাথে দেশের প্রচলিত আইন এবং আন্তজার্তিক বিধি-বিধানের পরিপন্থি।
নোটিশে আরও বলা হয়, দেশি-বিদেশি আইন, আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান ও উচ্চ আদালতের নজিরসমূহ পর্যালোচনায় দেখা যায় আদালতে কাঠগড়ার পরিবর্তে লোহার খাঁচার ব্যবহার অমানবিক, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ, আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান ও নির্দোষ অনুমানের নীতি -এর পরিপন্থি। মানুষের স্বাভাবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আদালতে লোহার খাঁচার অপসারণ একান্ত প্রয়োজন।
এ অবস্থায় সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদসহ আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নোটিশ পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচার অপসারণ করার অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় মৌলিক অধিকারের সুরক্ষার্থে হাইকোর্ট বিভাগে রিট আবেদন দায়ের করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশকারি ১০ আইনজীবী হলেন- জি.এম. মুজাহিদুর রহমান,মুহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন,মো. জোবায়দুর রহমান,মোহাম্মদ নোয়াব আলী, আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী, মোহাম্মদ সাজ্জাদ সারোয়ার,মো. মুজাহিদুল ইসলাম,মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন,মোহাম্মদ মিজানুল হক ও আবদুল্লাহ সাদিক।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ