বিএনএ ঢাকা: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ইভ্যালির’ চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন এক এক ভুক্তভোগী।
বুধবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুলশান থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বগ্রাম এলাকার বাসিন্দা আরিফ বাকের। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, মামলায় ইভ্যালি এমডি মোহাম্মদ রাসেলকে এক নম্বর ও চেয়ারম্যান শামীমাকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ইভ্যালির আরও বেশকজন কর্মকর্তাকে ‘অজ্ঞাতনামা’ দেখিয়ে আসামি করা হয়।
ভুক্তভোগী আরিফ বাকের জানান, গত ২৯ মে থেকে জুন পর্যন্ত ইভ্যালির অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার পণ্য অর্ডার করেন তিনি। যা নির্ধারিত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি সরবরাহে ব্যর্থ হয়। ফলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলার আবেদন করেছেন।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, ২৯ মে ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে চলতি বছরের মে এবং জুনে কিছু পণ্য অর্ডার করেন বাকের ও তার বন্ধুরা । এ বাবদ সব মূল্য বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। পণ্যগুলো ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি এবং নির্দিষ্ট সময়সীমায় সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানটি সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে সেগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার সেটির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়। সবশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করে পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা।
এক পর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য ও টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ধানমন্ডির কার্যালয়ে যান এবং এমডি রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চান ভুক্তভোগীরা। এতে ইভ্যালি সংশ্লিষ্টরা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে কার্যালয়ের ভেতর থেকে প্রধান নির্বাহী (সিইও) রাসেল উত্তেজিত হয়ে বেরিয়ে এসে তাদের ভয়-ভীতি দেখান। পাশাপাশি পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। ফলে তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিনযাপন করছেন। সেইসঙ্গে পণ্যগুলো বুঝে না পাওয়ায় আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ের এই সংক্রান্ত কমিটি। এর আগে, গত ২৫ আগস্ট ইভ্যালি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসাব চেয়েছিলো বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিঠিতে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠান, চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও এমডি মোহাম্মদ রাসেল-এর ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়।গত বছরের আগস্টে নাসরিন ও রাসেল-এর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয় বিএফআইইউ।
বিএনএনিউজ/আরকেসি
