বিএনএ ডেস্ক: সুইস ব্যাংকে এক বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ জমা করা হয়েছে। সুইস ব্যাংকগুলোতে এখন বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ ৮ হাজার ২৭৫ কোটি। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গোপনে অর্থ গচ্ছিত রাখার বিশ্বজোড়া খ্যাতি সুইজারল্যান্ডের। কঠোর গোপনীয়তায় গ্রাহকদের নাম-পরিচয় সংরক্ষণ করে সুইস ব্যাংকগুলো। অবৈধ আয় আর কর ফাঁকি দিয়ে জমানো টাকা আস্থার সাথা মানুষ জমা রাখে সুইস ব্যাংকে। কোন গ্রাহকের তথ্য আলাদাভাবে না দিলেও এক দশক ধরে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, প্রতি ফ্রাঁ ৯৫ টাকা করে ধরলেও দেশি মুদ্রায় যা ৮ হাজার ২৭৫ কোটি।
ঠিক এক বছর আগে, এই টাকার অঙ্ক ছিল ৫৬ কোটি ২৯ লাখ ফ্রাঁ বা ৫ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ, বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত বেড়েছে ২ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা।
সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, যদি কোনো বাংলাদেশি, নাগরিকত্ব গোপন রেখে অর্থ জমা রেখে থাকেন তবে ওই টাকা এই হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হয়নি। গচ্ছিত রাখা স্বর্ণ বা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমানও হিসাব করা হয়নি এই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনের হিসেবে, ২০২১ সালেই বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বেশি আমানত ছিল সুইস ব্যাংকে। ২০০২ সালে যা ছিল মাত্র ৩ কোটি ১০ লাখ ফ্রাঁ। দুই দশকে আমানতের পরিমান বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ। বৃদ্ধির হারও সবচেয়ে বেশি ছিল ২০২১ সালে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি’র হিসাবে, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৭১ হাজার কোটি টাকা।
সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর মোট আমানত বেড়েছে সুইজারল্যান্ডে। ২০২১ সালের শেষে দেশটির ব্যাংকগুলোতে মোট আমানত ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ফ্রাঁ। আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে ৪ হাজার কোটি ফ্রাঁ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুইজারল্যান্ডে গোপনীয়তা কমতে থাকায় অনেক ধনী এখন অবৈধ টাকা জমা রাখার জন্য ঝুঁকছেন লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড কিংবা বারমুডার মতো ট্যাক্স হ্যাভেনের দিকে।
এদিকে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরাতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। তার মাঝেও এত টাকা পাচার হওয়া উদ্বেগজনক বলে জানান অর্থনীতিবিদরা।
বিএনএ/ এ আর