25 C
আবহাওয়া
৫:৫০ অপরাহ্ণ - ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯০ (চট্টগ্রাম-১৩)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯০ (চট্টগ্রাম-১৩)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯০ (চট্টগ্রাম-১৩)

বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর।

আজ থাকছে চট্টগ্রাম-১৩ আসনের হালচাল

চট্টগ্রাম-১৩ সংসদীয় আসনটি কর্ণফুলী উপজেলা এবং আনোয়ারা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৯০ তম আসন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চট্টগ্রাম-১২ নামে পরিচত ছিল। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে সীমানা পুন:নির্ধারণের পর আসনটি চট্টগ্রাম-১৩ নামে পরিচিত হয়।

YouTube player

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫ শত ৯৯ জন। ভোট প্রদান করেন ৯০ হাজার ৪ শত ৫১ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪২ হাজার ৯ শত ৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এডভোকেট মোহাম্মদ কবির। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৩৩ হাজার ৫ শত ৬৩ ভোট।

ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন: বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি, ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনের আগে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারি সরওয়ার জামাল নিজাম বিএনপিতে যোগদান করেন। নির্বাচনে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫ শত জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১১ হাজার ৬ শত ২০ জন। নির্বাচনে বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৫২ হাজার ৭ শত ৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আতাউর রহমান কায়সার। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪১ হাজার ৯ শত ১ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম বিজয়ী হন

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১২ হাজার ৮ শত ৪৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫০ হাজার ১ শত ৫৭ জন। নির্বাচনে বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭৬ হাজার ৪ শত ৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬৮ হাজার ১ শত ৮৭ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৩৫ হাজার ১ শত ৪৭ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৩ হাজার ৯ শত ৭৯ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১০ হাজার ৯ শত ৫১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৮৬ হাজার ৭ শত ৫১ ভোট।

নবম সংসদ উপ-নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বিজয়ী হন

২০১২ সালের নভেম্বরে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৩ সালের জানুয়ারির উপনির্বাচনে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দশম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বিজয়ী হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪ শত ৫১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির তপন চক্রবর্তী। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান মাত্র ৫ হাজার ২ শত ৩২ ভোট।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে র্নিবাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ১০ হাজার ৩ শত ১৩ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩ শত ৬৬ জন। নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৮ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এরফানুল হক চৌধুরী, উদীয়মান সূর্য প্রতীকে গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক, মোমবাতি প্রতীকে ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী, টেলিভিশন প্রতীকে ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ’র নারায়ণ রক্ষিত এবং বটগাছ প্রতীকে খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪ শত ১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ৫ হাজার ৮ শত ৫৩ ভোট।

কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম সংসদে বিএনপি এবং পঞ্চম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দৈবচয়ন পদ্ধতিতে জরিপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর চট্টগ্রাম-১৩ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১৩ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৪৭.৭১% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৭.৫১%, বিএনপি ৩৭.১১%, জাতীয় পার্টি ৭.৫৯% জামায়াতে ইসলামী ২.৮৩%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৪.৯৬% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭০.৪২% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৭.৫৪%, বিএনপি ৪৭.৩০%, জাতীয় পার্টি ৮.০০%, জামায়াতে ইসলামী ৩.৭৭%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৩.৩৯% ভোট পায়।

২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭০.৫৫% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৫.৪১%, ৪ দলীয় জোট ৫০.৯৩%, জাতীয় পার্টি ১.১২%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২.৫৪% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৬.৭৫% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৫৪.৩৯%, ৪ দলীয় জোট ৪২.৫৩%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৩.০৮% ভোট পায়।
চট্টগ্রাম-১৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ। টানা ৪ বারের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ এই আসনের একক প্রার্থী। সৎ-পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও ক্লিন ইমেজের নেতা খ্যাত জাভেদ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও সাংগঠনিক দক্ষতার মাধ্যমে শক্ত অবস্থানে আছেন। সদ্য উদ্বোধন হওয়া বঙ্গবন্ধু টানেল তার এলাকার সঙ্গে পতেঙ্গার বন্ধন তৈরি করেছে।

স্থানীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের কন্যা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খানের সঙ্গে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঠান্ডা লড়াই রয়েছে। সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়েশা খান আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার স্থানীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা। সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়া রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি নেই।

বিএনপি এক দফার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় হরতাল অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। বেশিরভাগ শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে কিংবা অন্তরালে। এই অবস্থায় বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে নির্বাচনে গেলে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান। একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে দলীয় সিদ্ধান্তে সরে দাড়ান। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সরওয়ার জামাল নিজামকে আন্দোলন সংগ্রামে দেখা না যাওয়ার কারণে মোস্তাফিজুর রহমানের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ইরফানুল হক দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।

নির্বাচনী ভাবনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী বলেন, ভূমিমন্ত্রী বাংলাদেশে একজন সর্বজন সজ্জন নেতা হিসাবে পরিচিত। আখতারুজ্জামান চৌধুরীর বাবুর সন্তান হিসাবে তিনি মেধা দক্ষতার মাধ্যমে এলাকার ও দলের একজন অভিভাবকে পরিণত হয়েছেন। আগামী নির্বাচনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদই মনোনয়ন পাবেন এবং বিজয়ী হবেন।

নির্বাচনী ভাবনায় বিএনপির মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর গত ১৫ বছর ধরে মাঠে আছেন। মামলা-হামলা নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সরকার বিরোধী কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। দলের হাইকমান্ড থেকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন উল্লেখ করে মুস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। সে নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাবেন এবং জয়ী হবেন।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) সংসদীয় আসনে ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ ইদ্রিচ, ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাসদ (রব)’র মুখতার আহমদ সংসদ সদস্য হন। এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদে আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারেননি।

১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ, সপ্তম এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই চট্টগ্রামের চকবাজার থেকে অপহরণ করে ফটিকছড়িতে নিয়ে খুন করা হয় দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ সভাপতি জামাল উদ্দিন চৌধুরীকে। এই অপহরণ ও খুনের ঘটনায় সরওয়ার জামাল নিজাম ও তার ভাই মারুফ নিজামকে দায়ী করা হয়। তখন থেকে সরওয়ার জামাল নিজাম ঘরে-বাহিরে কোণঠাসা হয়ে পড়ে। নেতাকর্মীরা তাকে পরিত্যাগ করে। যার ঢেউ লাগে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে। আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন তিনি। তখন থেকে এলাকা ছাড়া সরওয়ার জামাল নিজাম। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেলেও নির্বাচনী গণসংযোগ দূরে থাক তার পোস্টারও দেখা যায়নি।

কর্ণফূলী এলাকায় বিএনপির কিছুটা ভিত থাকলেও আনোয়ারায় সাংগঠনিক অবস্থা খুবই নাজুক। তিন গ্রুপে বিভক্ত বিএনপি। বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন অপহরণ ও খুনের সঙ্গে জড়িত হেলাল উদ্দিনকে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন হওয়ার পর আরেক দফা বিভক্ত হয় বিএনপি। কিলার খ্যাত হেলাল উদ্দিন নিজ দলের নেতা হুমায়ন কবির আনসার ও দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহ সভাপতি মজিবুল ইসলাম খোকার ওপর হামলা করে। এই ঘটনায় বিএনপি থেকে বহিস্কার হন হেলাল উদ্দিনসহ ৪ জন। সব মিলিয়ে আনোয়ারা বিএনপির লেজে গোবরে অবস্থা। জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম কাগজে কলমে। জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক অবস্থা ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ে দূর্বল।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগে দৃশ্যমান দলীয় কোন্দল নেই, এছাড়া বঙ্গবন্ধু টানেল, ৬ লাইনের সড়ক যোগাযোগসহ হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়নের কারণে এই আসনে শক্ত অবস্থানে আছে আওয়ামী লীগ। সব মিলিয়ে এই আসনে আওয়ামী লীগ বেশ নির্ভার ও খোশ মেজাজে আছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ২৯০তম (চট্টগ্রাম-১৩) সংসদীয় আসনটিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে নিশ্চিত, এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৮৯ (চট্টগ্রাম-১২)

বিএনএনিউজ/ শাম্মী, রেহানা, বাবর, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ