24 C
আবহাওয়া
৯:৪১ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » হুমকির মুখে আশুগঞ্জ বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো

হুমকির মুখে আশুগঞ্জ বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো

হুমকির মুখে আশুগঞ্জ বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো

বিএনএ ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়  মেঘনা নদীর তীরের প্লাবন ভূমি দখল করে রিটেইনিং দেয়াল নির্মাণ করে বালু ভরাট করেছে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড। বর্ষার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে আশুগঞ্জ বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। ভরাটকৃত অবৈধ বালু-স্থাপনা নিজ উদ্যোগ ও খরচে সরিয়ে নদীর প্লাবনভূমিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এপিএসসিএলকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

এপিএসসিএল অবৈধভাবে ভরাটকৃত বালু-স্থাপনা সরিয়ে না নিলে কিংবা ব্যর্থ বা অনিহা প্রকাশ করলে জেলা প্রশাসন, পাউবো, বিআইডব্লিটিএ এবং আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা কমিশনের প্রতিবেদনে একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু নির্দেশনা বাস্তবায়নে দায়িত্ব দেয়া জেলা প্রশাসনসহ চার প্রতিষ্ঠান নীরব রয়েছে।

জানা গেছে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সচিবের সই করা মেঘনার বালু ভরাট বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আশুগঞ্জ ইউএনও ও এপিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠান।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, এপিএসসিএল বি-টাইপ প্রকৃতির আবাসিক এলাকার জন্য উপজেলার সোনারামপুর ও সোহাগপুর মৌজায় মেঘনা নদীর গর্ভ ও তীরভূমি অবৈধভাবে বালু দিয়ে ভরাট করে নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সোহাগপুর মৌজায় বিএস মানচিত্র অনুযায়ী এপিএসসিএল কর্তৃপক্ষ ১০ফুট প্রস্থে নদীর দাগের মধ্যে বালু ভরাট করেছে। এপিএসসিএল মেঘনা নদী সংলগ্ন যে রিটেনিং দেয়াল নির্মাণ করেছে, তা মেঘনার নদীর দাগে অবস্থিত। অধিগ্রহণের সীমানা থেকেও এটি নদীর মধ্যে পড়েছে।

এছাড়া, সিএস মানচিত্র মোতাবেক উক্ত মৌজায় ৩৫৯ দাগের ৩০ শতক নদীর জমি অবৈধভাবে দখল করেছে। ভরাট কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কারণে নৌ-যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বি-টাইপ আবাসিক এলাকার জন্য অধিগ্রহণকৃত জায়গা পূর্ণাঙ্গভাবে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে মেঘনা নদীর জীব বৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব আরও প্রকট হবে। নৌ চলাচলের পথ সংকুচিত হবে। তাই মেঘনা নদী রক্ষার স্বার্থে বালু ভরাট ও নির্মাণ কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সেখান থেকে বালু সরিয়ে ফেলতে হবে।

এদিকে, মেঘনার উক্ত দখলকৃত জমি উদ্ধার করে জেলা প্রশাসনকে নিজ দখলে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেয়া হয়। জেলা প্রশাসককে উক্ত দখলকৃত জমি ১ নম্বর খাস খতিয়ানে নদীর জমি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। নদীর জমির শ্রেণি পরিবর্তনযোগ্য নয় এবং বন্দোবস্তযোগ্যও নয়। বালু ভরাট, আরসিসির সীমানা প্রাচীর ও স্থাপনাসমূহ এপিএসসিএলকে নিজ উদ্যোগ ও খরচে সরিয়ে নদী, ফরশোর, নদীর প্লাবনভূমিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেয়া হয়। এপিএসসিএল এসব সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হলে কিংবা অবহেলা ও অনিহা প্রকাশ করলে, জেলা প্রশাসন, পাউবো, বিআইডব্লিউটিএ ও আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।  নীরব রয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক মো. শহিদুল্ল্যাহ বলেন, চারটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এখানে জেলা প্রশাসনই সব।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এপিএসসিএল মেঘনার তীরভূমি ভরাট করে নির্মাণ কার্যক্রমের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের কোনো ছাড়পত্র এবং ভরাটের পূর্বে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, পাউবো, পরিবেশ ও বিআইডব্লিউটিএ’র কোনো অনুমতি নেয়নি। আর বাংলাদেশ পানি বিধিমালা অনুসারে বন্যার পানির প্রবাহ অঞ্চলে কোনো স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। স্থানটিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল ঘোষণার জন্য জেলা পাউবোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে কমিশন।

হুমকির মুখে আশুগঞ্জ বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো

এ বিষয়ে এপিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম এম সাজ্জাদুর রহমান বলেন, তারা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদন পেয়েছেন। বালু-স্থাপনা অপসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অপসারণ করতে সময় লাগবে।

জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, বালু ভরাট ও স্থাপনা নদীর ১০ ফুটের মধ্যে পড়েছে। ভরাটকৃত বালু অপসারণ করতে নদী রক্ষা কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনাসহ প্রতিবেদন তাপ বিদ্যুতের কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা আদেশ না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

বিএনএনিউজ/গোলাম সরোয়ার,আরকেসি

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ