বিএনএ, চট্টগ্রাম: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানে পতন হয় হাসিনা সরকারের। এদিকে সরকার পতনের পর হামলা ভাংচুর লুটপাট ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনে সহিংসতার সব দেখেছে চট্টগ্রাম। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাধারণ এবং সংরক্ষিত মিলিয়ে মোট ৩২টি কাউন্সিলরের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় চার কোটি ৩১ লাখ ৬৩ হাজার ২০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে চসিক।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, চসিকের সচিবালয় বিভাগ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে নাগরিক সেবা দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা মনিটরিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নগরের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রম চালু হয়েছে। আশা করছি সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
চসিক সূত্র জানা যায়, চসিকের আওতাধীন ৫৫টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের মধ্যে ৩২টিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে ২৭টি সাধারণ ও পাঁচটি সংরক্ষিত কাউন্সিলরের কার্যালয়। তবে ১৪টি কার্যালয়ে হামলা হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি।
সূত্র আরও জানায়, হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড ও ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে। দুটি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেড় কোটি ও ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে এক কোটি ৫৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অর্ধ কোটির কম ক্ষতি হয়েছে তিনটি ওয়ার্ডে। এরমধ্যে ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ড ও ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে ২৫ লাখ টাকা করে এবং ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ২০০ টাকা।
বাকি ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে ১০ লাখ টাকা, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে পাঁচ লাখ, ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে পাঁচ লাখ, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে সাড়ে তিন লাখ, ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে দুই লাখ, ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে দুই লাখ, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে দুই লাখ ১০ হাজার, ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে দুই লাখ ৩৫ হাজার ও ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এর বাইরে ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ড, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ড, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ড, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড, ৩ ও ৭ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এক লাখ টাকা করে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংরক্ষিত আসনের মধ্যে ৫ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকার।
এছাড়াও এক লাখ টাকার কম ক্ষতিক্ষতি হয়েছে ৯টি ওয়ার্ডে। সেগুলো হলো- ২ নম্বর জালালাবাদ, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, ২২ নম্বর এনায়েতবাজার, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩১ নম্বর আলকরণ, ৩৫ নম্বর বক্সির হাট, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ও ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড।
হামলা হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি ১৪ ওয়ার্ডের। এরমধ্যে পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ড ও বাকি ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড। সাধারণ ওয়ার্ডগুলো হলো- ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ড, ৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ড, ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড ও ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড। আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে তথ্য পাওয়া যায়নি ১, ২, ৪, ৬, ৮, ১০, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ/ বিএম/এইচমুন্নী