বিএনএ, ঢাকা: পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২০১৫ সালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সাবেক সৈনিক নোমান সিদ্দিকীর জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছিল। কিন্তু তখন তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় নোমানকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে সিআইডি। ২০২২ সালেও নোমান একই অপরাধে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ৩ মাস জেল খেটেছিল।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, নোমানকে এখন ২০১৫ সালের মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। নোমানসহ আরও ১৭ জন, স্বাস্থ্য ক্যাডার, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর, গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, অডিটর, নার্সিংসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত।
নোমান সিদ্দিকী পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর কাছ থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে তা মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করতেন। ফাঁস করা প্রশ্ন দিয়ে তাঁর স্ত্রীকেও শিক্ষা বিভাগে চাকরি পাইয়ে দেন।
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত এবং সিআইডির মামলার আসামি মাস্টার মাইন্ড মোহাম্মদ নোমান সিদ্দিকীর বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার রামদয়াল বাজার-সংলগ্ন মেঘনা নদীরপাড়ের চর আলগী গ্রামে। স্থানীয় চর মেহের আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে এসএসসি পাশ করে নোমান। এরপর ১৯৯৮ সালে সে সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগদান করে। একসময় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান- র্যাবেও চাকরি করেছেন। র্যাবে যোগদানের আগে লাইবেরিয়ায় ১৫ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে কাজ করেছে। ২০১৭ সালে তিনি চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন।
নোমান সিদ্দিকী মরহুম আবু তাহের মিয়ার ছোট ছেলে। তার বড় ভাই হলেন ওমর ফারুক হোসেন। রামদয়াল বাজারে তার একটি ফার্মেসি রয়েছে। মেঝো ভাই মো. সালাউদ্দিন সেনাবাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন।
২০০৭ সালে নোমান ঈশ্বরদী জেলার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিনের মেয়ে সাফিয়া সুলতানা স্বর্নাকে বিয়ে করেন। সাফিয়া শিক্ষা অধিদপ্তরে চাকরি করতেন। বিয়ের পর থেকে পরিবারের কারো সাথে তার সম্পর্ক ছিল না। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন।
বর্তমানে কারাগারে আটক নোমান সিদ্দিকী তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলেছেন, ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে তিনি অন্তত পাঁচ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বরের সেনপাড়া পর্বতায় একটি ফ্ল্যাটের মালিক নোমান। এ ছাড়া পল্লবীর কালশীর পলাশনগরে ইত্তেহাদ নামের একটি পোশাক কারখানা রয়েছে তাঁর।
বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/এইচমুন্নী