বিএনএ, ঝিনাইদহঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়। এরপর নানাভাবে তরুণীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা। ছেলে সিঙ্গাপুরে কর্মরত আছেন। দেশে এসেই বিয়ে করবেন। আর সেই পরিচয় গড়ায় প্রেমে। তিন মাস পরে দেশ ফিরেই গোপনে বিয়ের পিড়িতে বসেন যুবক জানারুল শেখ ইমন ও তরুণী রুকসানা আক্তার।
কিন্তু বিধি বাম। ছলচাতুরি করে ভুক্তভোগী তরুণীর কাছ থেকে প্রতারক জানারুল শেখ হাতিয়ে নেয় ৭ লাখ টাকা। বিয়ের পর তরুণীর সাথে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে জানারুল। রুকসানা আক্তার এখন নিরুপায়। বিয়ের স্বীকৃতি ও টাকা উদ্ধারের আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
প্রতারক জানারুল শেখ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের অলীদ শেখের ছেলে। প্রতারণার শিকার রুকসানা আক্তার টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার করোটিয়া গ্রামের শাজাহান শিকদারের মেয়ে।
রুকসানা আক্তার জানান, গত বছরের শুরুর দিকে ফেসবুকের মাধ্যমে জানারুলের সঙ্গে পরিচয়। জানারুল রুকসানার ফেসবুক আইডিতে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালেও অপরিচত হওয়ায় ৬ মাস ঝুলিয়ে রাখেন। তাকে বন্ধু তালিকায় যুক্ত করার জন্য জানারুল বিভিন্ন সময় মেসেঞ্জারে মেসেজ দিত। ৬ মাস পর জানারুলের মেসেজের উত্তর দেয় রুকসানা। এরপর চলতে থাকে তাদের কথোপকথন, হয় পরিচয়। পরে তা গড়ায় প্রেমে। জানারুল জানায় তিনি সিঙ্গাপুরে কর্মরত আছেন। দেশে এসেই বিয়ে করবেন রুকসানাকে। ৩ মাস পর দেশে ফেরেন জানারুল। থাকেন রুকসানার বর্তমান ঠিকানা গাজীপুরে।
তিনি জানান, ২০২১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তারা বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েকদিনের মাথায় শৈলকুপায় ফিরে আসে জানারুল। শুরু হয় নাটকীয়তা। উপায়ন্ত না পেয়ে তরুণী ছুটে যান তার স্বামী জানারুলের বাড়িতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে শুরু নির্যাতন। পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে নির্যাতন চালিয়ে পরের দিন তাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়া হয় নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য। নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা চালাতে থাকে রুকসানা। একপর্যায়ে জানারুল তাকে আশ্বস্ত করে সে আর বিদেশ যাবেন না দেশেই থাকবেন এবং তার পরিবার তাকে মেনে নেবে। কিন্তু তাকে ব্যবসার জন্য দিতে হবে টাকা। পরে ৭ লাখ টাকা তুলে দেন জানারুলের হাতে।
টাকা পেয়েই বদলে যায় জানারুল। উপায়ন্ত না পেয়ে রুকসানা গাজীপুর জেলা দায়রা জজ আদালতে যৌতুক আইন ২০১৮/৩ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিয়ে জানারুলের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা দায়রা জজ আদালত থেকে কোন নোটিশ আসেনি। অভিযোগ পেলে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএনএ/আতিক, এমএফ