29 C
আবহাওয়া
১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ - জুন ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ধামরাইয়ে স্কুলের নামে বাবার দান করা জমি ছেলের দখলে

ধামরাইয়ে স্কুলের নামে বাবার দান করা জমি ছেলের দখলে

ধামরাইয়ে স্কুলের নামে বাবার দান করা জমি ছেলের দখলে

।। ইমরান খান ।।

বিএনএ, সাভার (ঢাকা): সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য তিন যুগ ধরে অপেক্ষা করছেন ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের এলাকাবাসী। তবে গ্রামবাসীর অপেক্ষা শেষ না হলেও ধৈর্যচ্যুত হয়ে জমি দখল করে নিয়েছেন জমি দাতার সন্তান আব্দুর রহমান নামে এক মুক্তিযোদ্ধা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রামদাইর গ্রামের খেলার মাঠের সাথে স্কুলের জন্য বরাদ্দকৃত জমি রয়েছে। সেই জমির কিছু অংশ দখল করে টিনের বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রামদাইর এলাকার মো. রোস্তম আলী খান ও আব্দুল মান্নান খান তাদের পৈতৃক সম্পত্তি থেকে ১১ শতাংশ জমি জহির উদ্দিন খানের নামে লিখে দেন। পরে জহির উদ্দিন খান ওই ১১ শতাংশ সহ মোট ৩৩ শতাংশ জমি রামদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষে শিক্ষা সচিব শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকাকে দানপত্র দলিল করে দেন ১৯৯৪ সালে। যার দলিল নং ১০৭৩৬। সবকিছু ঠিকঠাক হলেও স্কুল প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে আসছেন জহির উদ্দিন খানের ছেলে আব্দুর রহমান খান। তার বিরোধিতার জন্যই রামদাইর এলাকায় ৩০ বছর অপেক্ষা করেও স্কুল হচ্ছে না।

রামদাইর এলাকার হাশেম খান বলেন, আমাদের ৩নং ওয়ার্ডে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এছাড়া কোন কিন্ডারগার্টেনও নেই। আমাদের গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চাদের অনেক দুরে গিয়ে পড়ালেখা করতে হয়। আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি, ভয়ে থাকি। এই বুঝি বাচ্চারা হারিয়ে গেল। অথবা কোন দুর্ঘটনা ঘটলো। আমরা চাই আমাদের গ্রামে যেন একটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়। তাহলে বাচ্চাদের লেখাপড়া আরও ভালো হবে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, রামদাইর গ্রামে সরকারি স্কুলের জন্য ৩৩ শতাংশ জমি দেওয়া হয়। এরমধ্যে ২২ শতাংশ জমি দেয় আব্দুর রহমান খানের বাবা জহির উদ্দিন খান। তবে জমি দেওয়ার পর থেকেই জহির উদ্দিন খানের ছেলে আব্দুর রহমান স্কুলের বিরোধিতা করে আসছেন। কারণ স্কুল না হলে জমি ফিরিয়ে নিবে তাই আব্দুর রহমান বিরোধিতা করেছেন। একপর্যায়ে ১০ বছর আগে তার বাবার দেওয়া জমি দখল করে টিনের ঘর নির্মাণ করেন তিনি। তার বিরোধিতার জন্যই এলাকায় স্কুল হয়নি।

জমি দখলের বিষয়ে আব্দুর রহমান বলেন, জমি দখল করবো কেন। জমিটা তো আমাদের দখলেই। স্কুল হয় নাই সরকারের বিরুদ্ধে মামলা কইরা জমি ফিরিয়ে নিয়েছি। সরকার যদি কখনো স্কুল করে তখন জমি দিয়ে দিব। ওইখানে আমরা স্কুল করবো, আমিই করবো। এলাকায় স্কুলের দরকার আছে। আমার প্ল্যান আছে এমপি সাহেবকে দিয়ে ওইখানে একটা স্কুল করবো। তখন আরও জায়গা লাগলে আরও দিব।

তার বাবা স্কুলের নামে কতো শতাংশ জমি দিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বাবা কতো শতাংশ জমি দিয়েছিল তা বলতে পারবো না। আমি তখন এলাকার বাইরে চাকরি করছি। তিনজনে মিলে স্কুলের নামে ৩৩ শতাংশ জমি দিয়েছিল। এলাকার দুই জন আমার বাবার নামে জমি দেয়। আমার বাবা আবার পুরো জমিটা স্কুলের নামে দেয়। স্কুলটা অলরেডি চলছিল। স্কুল পরে বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলটা বন্ধ হয়ে গেলে এটার আর কার্যকারিতা থাকে না। যার যার জমি তার তার দখলেই আছে।

ধামরাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোছা. কামরুন্নাহার বলেন, রামদাইর এলাকায় কোন স্কুল কমিউনিটি স্কুল বা রেজিস্ট্রার কোন স্কুল নেই। স্কুলটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ছিল তাই সরকারি হয়নি। অথবা সরকারিকরণের জন্য কোন প্রসেসিং করা হয়নি। যদি প্রসেস করা হতো তাহলে ২০১৩ সালে হয়ে যেতো। ২০১৩ সালে অনেকগুলো স্কুল সরকারি করা হয়েছে।

জমি দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। স্কুলের জমির কোন কাগজপত্র আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে আমি আপাতত কিছু বলতে পারবো না।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খান মোহাম্মদ আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, এটা স্কুলের জমি, স্কুলেরই থাকবে। কেউ দখল করতে পারবে না।

বিএনএনিউজ/ বিএম/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ