বিএনএ, ঢাকা: প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত গ্রেপ্তার আসামিদের সঙ্গে ব্যাংকিং লেনদেন, জব্দকৃত মোবাইল ফোনের তথ্য ও জবানবন্দির ভিত্তিতে ফেঁসে যাচ্ছেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশ্নপত্র ফাঁসে চাকরি পাওয়া কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় কারাগারে আটক ১১ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আদালতে আবেদন করা হবে।
কর্মকর্তাদের একটি স্তর পর্যন্ত গ্রেপ্তারে সরকারের শীর্ষ মহলের সবুজ সংকেত রয়েছে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার ছয়জনের জবানবন্দিতে নাম আসা পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারী, চাকরি পাওয়া কর্মকর্তা ও প্রশ্নপত্র বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে মাঠে কাজ করছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অন্যদিকে, বিসিএস ক্যাডারের সুনাম রক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের শাস্তি চান বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তারা।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আসামিদের দেওয়া তথ্য, ডিজিটাল প্রমাণ ও আলামত যাচাই-বাছাই করে আমরা অপরাধীদের শনাক্ত করছি। গ্রেপ্তারের পর দায় স্বীকার করে ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, বাকিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় যাদের নাম আসবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিসিএসসহ অন্যান্য পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে চক্রের সদস্যদের লেনদেনের বড় অংশই হয়েছে ব্যাংকের মাধ্যমে। চাকরি হওয়ার আগে চক্রের সদস্যরা নগদ টাকার পাশাপাশি ব্যাংকের চেক নিত। ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হওয়া চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে ডিজিটাল প্রমাণ রয়েছে। এ ছাড়া যেসব চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি ক্যাশ টাকা লেনদেন হয়েছে তাদের বিষয়েও সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে। আবার পিএসসির শীর্ষ যেসব কর্মকর্তা গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ পিএসসির অন্য কর্মচারীদের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতেন, তাদের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। তালিকা ধরে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, পিএসসির সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁস ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অনেক পুরনো। পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কাফরুল থানার মামলাটি দায়ের করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অধ্যাপক মাহফুজুরের বিরুদ্ধে ২৭তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় ঘুষ গ্রহণসহ পরীক্ষায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। সেই মামলায় মাহফুজুর রহমানের ১৩ বছর সাজাও হয়। ২০০৯ সালের ১৭ জুন তিনি আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
বিএনএনিউজ/ রেহানা/ বিএম/হাসনা