34 C
আবহাওয়া
১:৩৭ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৯

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৯

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র

একটি প্রামাণিক গ্রন্থ যা ১৯৭১ সালে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সংগঠিত বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত তথ্যভান্ডার হিসাবে স্বীকৃত। ১৫ খন্ডে প্রকাশিত এ তথ্য ভান্ডারে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের অজানা। বিশেষ করে এ প্রজন্ম জানেই না কত রক্ত, কত কষ্ট, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অর্জন ও উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাঙ্গালি জাতি বিলীন হয়ে যেত! এমনটাই মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানাতে ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে আসছে। ওয়েব সাইট সার্ভার রক্ষনাবেক্ষণ জটিলতার কারণে কিছু দিন বন্ধ ছিল। আবারও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে যাচ্ছে। ১ মার্চ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে বাংলাদেশ স্বাধীনতার  নেপথ্যে গণ মাধ্যমের ভূমিকা, বিশেষ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের।

আজ প্রকাশিত হলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৯

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রথম কথিকা
বেলাল মোহাম্মদ
কবির ভাষায়:
‘স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় রে
কে বাঁচিতে চায়
দাসত্ব শৃংখল বলো কে পরিবে পায় রে
কে পরিবে পায়।’

অত্যাচারের স্টীম-রোলার চালিয়েছে
দাসত্বের শৃংখল ভেঙ্গেছে সাড়ে সাত কোটি বাঙালী। স্বাধীনতাবঞ্চিত জীবন থেকে তারা স্বাধীন জীবনের জয়যাত্রার পথে এগিয়ে চলেছে। এই এগিয়ে চলার পথ দুর্গম, দুর্বার। এই যাত্রাপথে কোনো শাসক-শোষকের দমননীতি, কোনো অশুভ শক্তির বিধিনিষেধ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। জীবন জয়ের অভিযাত্রীদের কে বাধা দেবে? কে এই অভিযাত্রীদের পথ রোধ করে দাঁড়াবে? সেই সাধ্য কারুর নেই, সেই দু:সাহস দেখাবার সকল ‘পশ্চিম পাকিস্তানী দাপট’ আজ ছিন্ন-ভিন্ন, পর্যুদস্ত।
ভাবতে অবাক লাগে, তেইশ-তেইশটি বছর কিভাবে সেই তথাকথিত পাকিস্তান সরকার বাংলার মা-বোন, বাংলার শিশু-বৃদ্ধ, বাংলার কৃষক-শ্রমিক, জেলে-তাঁতী কামার-কুমার-মেহনতি মানুষের উপর অত্যাচারের স্টীম-রোলার চালিয়েছে।

ওদের ক্ষমা নেই-ক্ষমা নেই
আমার সন্তানের দুধ ওরা কেড়ে নিয়েছে, আমাদের ক্ষেতের ফসল ওরা লুটে নিয়েছে, ওরা আমাদের মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করেছে, তথাকথিত সংহতির ধুয়া তুলে ওরা আমাদের নিরীহ জনপদের ওপর শাসনের নামে চালিয়ে গেছে শোষণ।
বাংলার মানুষকে ওরা লাঞ্চনা-গঞ্জনা আর অবহেলা দিয়ে দিয়ে নিজেদের জাতিগত দুশ্চরিত্রেরই পরিচয় দিয়েছে।
আজকের স্বাধীন বাংলার পথে-ঘাটে দেখতে পাওয়া যায় বীর জনতার গড়া স্বত:স্ফূর্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা। পশ্চিম পাকিস্তানী গুপ্তচর, বর্বর সৈন্যদের প্রত্যেক প্রবেশপথ আজ রুদ্ধ। ওদেরকে যেখানেই দেখা যাচ্ছে, স্বাধীন বাংলা মুক্তিবাহিনীর রাইফেল গর্জে উঠছে, এফোঁড়-ওফোঁড় করে চলে যাচ্ছে বুলেট- আজ ধরাশায়ী হচ্ছে এক-একটি হানাদার দুশমন। ওদের ক্ষমা নেই-ক্ষমা নেই।

স্বাধীন বাংলার প্রতিটি গৃহ এক-একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ। আমাদের মা-বোনেরাও আর নিস্ক্রীয় হয়ে নেই। প্রত্যেকেই সশস্ত্র। দুশমনকে উচিত সাজা দেবার জন্যে নারী-পুরুষ শিশু-বৃদ্ধ সবাই সদাপ্রস্তুত।
বাঙালী আজ জেগেছে। দাসত্বের শৃংখল ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছে তারা-
এবার বন্দী বুঝেছে,
মধুর প্রাণের চাইতে ত্রাণ
মুক্তকন্ঠে স্বাধীন বিশ্বে
উঠিতেছে এক তান;
জয় নিপীড়িত জনগণ জয়
জয় নব অভিযান
জয় নব উথ্থান।’
জয় স্বাধীন বাংলা।
প্রচার: ২৮-৩-৭১
(তথ্যসুত্র:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র – ৫ম খন্ড। পৃষ্ঠা নং ১২) চলবে

আরও পড়ুন আগের পর্ব :

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৮

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৭

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৬

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৫

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৩

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০১

সম্পাদনা: এইচ চৌধুরী, গ্রন্থনায়: ইয়াসীন হীরা

Loading


শিরোনাম বিএনএ