বিএনএ, চুয়েট: দুর্যোগে চট্টগ্রামের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে আপদকালীন পরিকল্পনা ‘মাল্টি হ্যাজার্ড কন্টিজেন্সি প্ল্যান’ এর একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। পরিকল্পনাটি প্রণয়নে প্রধান পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহ জালাল মিশুক। পাশাপাশি পরিকল্পনাটি প্রণয়নে সহযোগিতা করেছে উন্নয়ন সংস্থা ইপসা ও সেভ দ্য চিলড্রেন। আপদ-কালীন পরিকল্পনায় চট্টগ্রামের নানাবিধ দুর্যোগের উৎস বর্ণনা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়গুলো বিশদভাবে তুলে ধরা হয়।
বুধবার (৭ জুন) নগরীর আন্দরকিল্লায় চসিক ভবনের কে বি আব্দুস সাত্তার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় চুয়েট শিক্ষক এ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
উপস্থাপনায় নগরীতে ঘটে যাওয়া ৫টি দুর্যোগ নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়। নগরীর জলাবদ্ধতা, পাহাড়-ধস, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা, ভূমিকম্প ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণগুলোও ব্যাখ্যা করা হয়।
চুয়েট শিক্ষক শাহ জালাল মিশুক জানান, “আমরা প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫ টি দুর্যোগ নিয়ে কাজ করেছি। জলাবদ্ধতা, পাহাড়-ধস, অগ্নিকাণ্ড, ভূমিকম্প ও ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, ঝুঁকির মাত্রা নিরুপণ করেছি। পাশাপাশি দূর্যোগ পূর্ববর্তী, দূর্যোগ কালীন ও পরবর্তী সময়ে সিটি কর্পোরেশন এর করণীয় কি কি হতে পারে সেসব বিষয়গুলোও বিশদভাবে তুলে ধরি।”
এদিকে সভায় বক্তব্য পর্যায়ে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “চট্টগ্রাম একসময় প্রচুর জলাশয়ে ভরপুর ছিল। কিন্তু নতুন কৌশল হিসেবে এক শ্রেণির লোক প্রথমে সেসব জলাশয় আবর্জনা দিয়ে ভরাট করছে, পরে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। একইভাবে অন্য আরেকশ্রেণির প্রভাবশালী রাতের অন্ধকারে পাহাড় কেটে বসতবাড়ি করছে। সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে এ ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।”
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের পরিচালনায় সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ইপসা (প্রয়াস-২) প্রকল্প সমন্বয়কারী সানজিদা আক্তার। চসিকের জন্য প্রণীত মাল্টি হ্যাজার্ড কন্টিজেন্সি প্ল্যান উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহজালাল মিশুক।
উপস্থাপনা শেষে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন চসিক প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, চসিকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. জহুরুল আলম জসিম, চসিক কাউন্সিলর এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, ইপসা এবং সেভ দ্য চিলড্রেন (প্রয়াস-২) প্রকল্পের আওতায় কনসালটেন্সি প্ল্যানের সহযোগিতায় ২০১৯ সাল থেকে চসিকের সাথে দফায় দফায় মিটিং এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে পরিভ্রমণ, কেআইআই, এফজিডি, পরবর্তীতে কয়েক দফা বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে মতামত গ্রহণের মাধ্যমে এবং সর্বশেষ চসিকের অনুমোদন সাপেক্ষে এটি চুড়ান্তভাবে প্রণীত হয়।
বিএনএনিউজ/গোলাম রব্বানী,বিএম