বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পটিয়া ও বোয়ালখালীর পাহাড়ি এলাকায় একের পর এক ঘটছে অপহরণের ঘটনা। গত তিন বছরে দুই শতাধিক অপহরণের ঘটনা ঘটেছে পটিয়া ও বোয়ালখালীর পাহাড়ি এলাকায়। অপহরণের পর অপহৃত মানুষগুলোর ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন। পরে তাদের পরিবারের কাছে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ। সব অপহরণের সঙ্গে জড়িত পটিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলের একটি বড় সন্ত্রাসী গ্রুপ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে পটিয়া সীমান্তে পাহাড়ি সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রায় সময়েই অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় তারা। বন মালিক ও কর্মচারীদের টার্গেট করে প্রথমে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি করে তারা। চাঁদা না দিলে অপহরণ করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে।
স্থানীয় এক কাঠ ব্যবসায়ী জানান, পাহাড়ে যে সন্ত্রাসী আছে তারা পাহাড়ি এলাকার কিছু মদ ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগসাজশ করে মদ সরবরাহের পথ ক্লিয়ার করে দেয়। বিনিময়ে স্থানীয় সম্পদশালীদের তালিকা ও তাদের মোবাইল নম্বর সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করে মদ ব্যবসায়ীরা। তারা মুক্তিপণ আদায়েও পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করে।
কেলিশহর ইউনিয়নের পূর্ব রতনপুর এলাকার ইসমাইল, বোয়ালখালী এলাকার জুয়েল ও জাহাঙ্গীর আলম, মীর কাসেমসহ আরও কয়েকজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায় করেছে অপহরণকারীরা। চট্টগ্রামের চন্দনাইশে পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিন মিনি ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ট্রাক চালানোর আয় দিয়েই চলত পরিবার। গত তিন বছর আগে নিখোঁজ হন পটিয়ার পূর্ব হাইদগাঁও থেকে। তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায় ১০-১২ জন পাহাড়ি সন্ত্রাসী। তাকে উদ্ধারে বেশ কয়েকবার অভিযান চালায় পুলিশ ও র্যাব। কিন্তু লাভ হয়নি। এরই মধ্যে এক দিন ফোন আসে নিখোঁজ মোসলেমের বড় ভাইয়ের কাছে। মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ না দেওয়ায় তাকে মেরে ফেলা হয়। তার মরদেহের সন্ধান আজও মেলেনি।
এ বিষয়ে পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে স্থানীয়দের নিরাপদ রাখতে বিভিন্ন সময় আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। প্রশাসন সবসময় তৎপর রয়েছে। স্থানীয় যেসব মদ ব্যবসায়ী পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করছে তাদের তালিকা প্রস্তুত করে আমরা কাজ করছি। যারা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করছে তাদের গ্রেফতারে আমরা কাজ করছি।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ/এইচমুন্নী