40 C
আবহাওয়া
৪:৩৪ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সতীনের সঙ্গে ঘর করা সম্ভব, বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন অসম্ভব!

সতীনের সঙ্গে ঘর করা সম্ভব, বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন অসম্ভব!


বিএনএ, ডেস্ক : ‘সতীনের সঙ্গে ঘর করা সম্ভব, বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন অসম্ভব।’  বিএনপির চরিত্র প্রসঙ্গে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাতক্ষীরা জেলা জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম। কুষ্টিয়া জেলার  জামায়াত ইসলামীর এক ঘরোয়া বৈঠকে এই মন্তব্য করেন তিনি।

YouTube player

নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াতকে এড়িয়ে চলার যে কৌশল নিয়ে বিএনপি এগোচ্ছিল, এখনো সে অবস্থানেই আছে দলটি। বিএনপি ও জামায়াত—দুটি দলেরই আন্দোলনের লক্ষ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো। কিন্তু রাজনীতির নানা হিসাব-নিকাশে এবার সরকারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াতকে এড়িয়ে চলছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে এক বছর ২০ দলীয় জোট ভেঙে নতুন একাধিক জোট হলেও সেসব জোটে নেই জামায়াত। যদিও জামায়াত নিজেদের মতো করে বিএনপির সমান্তারাল আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করলেও ভিতরে ভিতরে বিরোধ তুঙ্গে। বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে নানা ছলছাতুরি অব্যাহত রেখেছে।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট রাতে মারা যান। এক দফার আন্দোলন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক হিাসাব-নিকাশ থেকে বিএনপি সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। কিন্তু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শোকবার্তায় সাঈদীর দলীয় পরিচয় বা জামায়াতের নাম ব্যবহার করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে বিএনপি একটা কৌশল নিয়েছে বলে মনে করেন জামায়াত ইসলামী।

একই অপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াতের ৫ জন শীর্ষ নেতার ফাঁসি হলেও বিএনপি তখন কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বলে অভিযোগ জামায়াত ইসলামীর। এমনকি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন আবদুল আলীম। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে আবদুল আলীম কারাগারে মারা যান ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট। তাঁর মৃত্যুতে বিএনপি কোনো শোক প্রকাশ করেনি। একই অপরাধের দায়ে ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তখনো বিএনপি কোনো বক্তব্য দেয়নি।

জামায়াতে ইসলামীর উচ্চপর্যায়ের নেতাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, কার্যত ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগ থেকে জামায়াতকে এড়িয়ে চলে বিএনপি। জামায়াতের ওই সময়ে আন্দোলনে সহযোগীতা করেনি বিএনপি। যদি করতো তাহলে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগ করতে পারতো না এমনটা মনে করে জাময়াত ইসলামী। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের পর জামায়াত ইসলামী বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি সরকার গঠন করে জামায়াত শিবিরের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে । ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগিতে জামায়াতের দাবির প্রতি সম্মান দেখায়নি বিএনপি, উল্টো অপমান করে বলেছে জামায়াতকে নিয়ে ঝামেলায় আছে বিএনপি!

জামাতের দাবি ছিল ৫৪ আসন, কিন্তু ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ১৮টি। জামায়াতের এই ঘরোয়া বৈঠকে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ নয়- বিএনপিই জামাতের শত্রু। জোটের নামে কর্মসূচী দিলেও জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে পরার্মশ করতেন না বিএনপি নেতারা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত ইসলামীকে সম্মানজনক আসন না দিলে একলা চলো নীতি গ্রহণ করবে এবং ১৫০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন ২০২৩ সালের ৩ জুন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেওয়ার অনুমতিটি ছিল সম্ভবত আওয়ামী লীগের রাজনীতির অংশ।এই সমাবেশ করে প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত। সমাবেশের আগে পুলিশকে ফুল দিয়ে আলোচিত- সমালোচিত হয়েছে জামায়াত। এই সমাবেশ করে দলটির আত্মবিশ্বাস এতটাই ওপরে উঠেছিল যে তারা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ সরকারবিরোধী আন্দোলন করবে না বলে ঘোষণা দেয়।

জামায়াত বলেছিল, তারা আর বিএনপির সঙ্গে নেই। তখন থেকে নিজেরাই আলাদাভাবে সরকারবিরোধী কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে । কিন্তু অল্প দিনের মধ্যে গনেশ উল্টে যায়। জামায়াতকে আর কোন সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। বিএনপি ২৮ অক্টোবর পল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। রাজনৈতিক উত্তপ্ত অবস্থায় একইদিন শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় জামায়াত। কিন্তু দলটির নিবন্ধন নেই এই অজুহাতে পুলিশ তাদের লিখিত অনুমতি না দিলেও তারা আরামবাগে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে সক্ষম হয়। ফলে জামায়াতকে নিয়ে বিএনপির সন্দেহ ও অবিশ্বাসের পালে নতুন করে হাওয়া লাগে। এখন দেখার অপেক্ষা ঘোলাটে সহিংস রাজনীতিতে বিএনপি- জামায়াতের সেই ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচন থেকে একসঙ্গে পথচলা কোথায় গিয়ে থামে?

বিএনএনিউজ২৪ডটকম 

Loading


শিরোনাম বিএনএ