31 C
আবহাওয়া
১১:৩১ অপরাহ্ণ - মে ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ভারি বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পাহাড়ে ১৯৩ আশ্রয়কেন্দ্র

ভারি বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পাহাড়ে ১৯৩ আশ্রয়কেন্দ্র

পাহাড়

বিএনএ, বান্দরবান: গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের আশঙ্কা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ধসে পড়েছে পাহাড়ের মাটি। এখনও বড় ধরনের কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলেও, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে যেকোনও সময় ঘটতে পারে প্রাণহানির ঘটনা। ভারী বর্ষণের কারণে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।

এদিকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে বসবাসকারী ও নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীদের জন্য জেলাজুড়ে প্রায় দুই শ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ আবাস ছেড়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে মাইকিংও করছে প্রশাসন।

স্থানীয়রা জানান, বান্দরবানে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে লক্ষাধিক মানুষ। জেলার লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, রুমা থানচি, রোয়াংছড়ি ও সদরসহ প্রত্যেক উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে এসব মানুষ। ভৌগোলিক অবস্থান গত কারণে পার্বত্য এলাকায় পর্যাপ্ত সমতল ভূমি না থাকায় দরিদ্র অসহায় মানুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই পাহাড়ের পাদদেশে বসতি স্থাপন করে। তবে শীত ও শুষ্ক মৌসুমে তেমন একটা ঝুঁকি না থাকলেও বর্ষাকালে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমি ক্ষয় হয়ে দেখা দেয় পাহাড় ধস। গত কয়েক দিন ধরে টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকায় দেখা দিয়েছে এ পাহাড় ধসের আশঙ্কা।

রোববার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে সকালে জেলা শহরের বীর বাহাদুর নগর ও স্টেডিয়াম এলাকায় পাহাড় ধসে আহত হন মো. রিদোয়ান (১৯) ও রুমি আক্তার (২৮) নামে দুজন। অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ির করিমার ঝিরি জসিম উদ্দিনের মাটির বাড়িতে দুপুর ১টার সময় পাহাড় ধসে পড়ে। এতে ঘরে থাকা তার স্ত্রী রোকসানা (২৪), মেয়ে আনিকা (৮), জেসমিন (৬) ও ছেলে শাহাজালাল (দেড় বছর) আহত হয়।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ইফতিয়াক জানান, জেলা শহরে পৃথক ঘটনায় বসতবাড়ির ওপর পাহাড় ধসে পড়ে মো. রিদোয়ান ও রুমি আক্তার আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। আর নাইক্ষ্যংছড়িতে আহতদের মধ্যে রোকসানা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে টানা বর্ষণ ও নদীর পানি বাড়তে থাকার কারণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে চলেছে। এতে যেমন জনবসতি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে, তেমনি পাহাড় ধসের ঝুঁকিও বাড়ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে জেলার সাতটি উপজেলায় ১৯৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে প্রশাসন। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের। এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার দেড় শতাধিক লোক নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রাণহানি এড়াতে পাহাড় ধস এবং নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজনদের ঝুঁকিপূর্ণ বস্তি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফ থেকে।

রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা পাহাড়ি জেলাটিতে এ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে জানিয়েছেন বান্দরবান মৃত্তিকা পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দুর্গত মানুষের জন্য ২০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য ও নগদ এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৪৩টি মেডিকেল টিম। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে লোকজন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের।’

সরকারি তথ্য মতে, বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসে ২০১৭ সালে ১৬৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। আর আহত হন ২২৭ জন। পাহাড় ধসে ওই বছর তিন হাজার ৭৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৩৬ হাজার ৬৩৭টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ