।। এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন ।।
বিএনএ, কক্সবাজার: পাহাড়েও সোনা ফলা যায়, প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশকে সমুন্নত রেখে কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়াপালংয়ের জুমচাষ নজর কেড়েছে সকলের। দেখতে ছবির মতো সুন্দর, যা রূপকথার গল্পকে ও হার মানাতে পারে। সুউচ্চ পাহাড় আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যের আরেক নাম সংরক্ষিত বনভূমিতে গড়ে উঠা জুমচাষ। পাহাড় আর জুমচাষের নয়নাভিরাম নৈসর্গিক দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। যা দেখতে দলে দলে স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদুরান্ত থেকে লোকজন দৈনন্দিন ভীড় করছে প্রতিদিন। বাদ যাচ্ছেনা পর্যটকেরাও।
জালিয়াপালং ১নং ওয়ার্ডের জুম্মাপাড়া এলাকায় পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে গড়ে উঠা জুমচাষ দেখতে দলবল নিয়ে ছুটছে স্থানীয়সহ বিভিন্ন এলাকার তরুণ তরুণীরা। পাহাড়ের সবুজায়ন, তার মাঝে জুমচাষ যেনো হাতছানি দিচ্ছে ভ্রমণপিপাসুদের।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কথা হয় ঘুরতে আসা বেশ কয়েকজনের সাথে। তাদের কাছে জানতে চাইলে, প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য আরও অনেক বেশি আনন্দ দিচ্ছে বলে জানায়। সবচেয়ে বেশি সৌন্দর্য্যের স্থান হিসেবে ঐ এলাকার জুমচাষকে বেছে নিয়েছেন তারা। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যে মুগ্ধতা তাদের যেনো বারবার কাছে টেনে নিচ্ছে এমন অনুভূতি ব্যক্ত করেন অনেকে।
কক্সবাজার থেকে ট্যুরিষ্ট গাইড আরমান গিয়েছিলেন ৮ জন পর্যটক নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার ইনানী পাটোয়ারটেকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময় পার করার পর হোটেলে বসে ইনানীতে যখন খাবার খাচ্ছিলেন, তখন তারা বলাবলি করছিলেন কাছাকাছি সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত আর কি দেখা যেতে পারে। এমন সময় হোটেল মালিক স্থানীয় বাপার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খুব কাছে মনোরম সুন্দর এই জুমচাষ দেখার কথা। এ কথা শোনার পর তাদের আগ্রহ বেড়ে যায় পাহাড়ী ঢালু জমিতে সবুজ সমারোহ জুম চাষ দেখার। ৮ জনের মধ্যে তিনজন ছিলেন নারী।
তাদের দলপতি এহসানুল করিম তিনি একজন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা। বাড়ি ঢাকার যাত্রাবাড়িতে। তিনি একজন পরিবেশবাদী লোক, তাই পাহাড়ের উঁচু নীচুতে জুম দেখতে ছিলেন উদগ্রীব। তাই সময় নষ্ট না করে সবাই দলবেঁধে চলে যান সেখানে। তাদের মধ্যে পাহাড়ি পথ মাড়ানোর কোনো অভ্যাস কারো ছিল না। তবুও মনেরজোরে প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে ঝুঁকি নিয়ে এখানে ছুটে এসেছি।
পালংখালী এলাকা থেকে জুম খেতে ঘুরতে আসা তুষার বলেন, আসার সময় যত কষ্ট পেয়েছি। এখানে আসার পর সব ভুলে গেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, বিশ্রামাগার এবং কয়েকটি খাবারের দোকান থাকলে এই এলাকাটি নতুন পর্যটন নগরী হিসেবে আলাদা সুখ্যাতি অর্জন করবে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মাসুদ পারভেজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে আছি। কিন্তু এত সুন্দর এলাকা রয়েছে তা আগে জানতাম না। আমার মনে হয় দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম জুম্মাপাড়া এলাকায় পাহাড়ি এ জুম খেত। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষেরা সেখানে বিশাল বিস্তীর্ণ এলাকায় পরিবেশ সমুন্নত রেখে প্রতি বর্ষা মৌসুমে সেখানে জুমচাষ করে থাকে।
আরও পড়ুন: কর্ণফুলীর তীরে আরেক শহর আনোয়ারা
বিএনএনিউজ/বিএম