বিএনএ, ডেস্ক : রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় শিক্ষার্থী সহ চারজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন,খিলগাঁও সামিয়া আক্তার (১৪), খিলগাঁও শিহাবুল ইসলাম (২৪), যাত্রাবাড়ী প্রিয়ন্তী সরকার (১৪)ও বাড্ডায় বিথি আক্তার (২০)।তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে রসুলবাগ এলাকার একটি বাসায় সিহাবুল ইসলাম (২৪) নামের এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত দুইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বোন উম্মে সাইমা জানান, আমার ভাই, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিল স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য পরীক্ষাও দিয়েছিল। স্কলারশিপ না পাওয়ায় নিজের উপর অভিমান করে সিলিং ফ্যানে হুকের সঙ্গে বেল্ট গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়।পরে আমরা দেখতে পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে আমার ভাইকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে,যাত্রাবাড়ির কাজলা ভাঙ্গা প্রেস এলাকায় প্রিয়ন্তী সরকার (১৪)এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে।পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সোয়া একটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই প্রিতম সরকার জানান, আমার বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল বাবা-মা পড়াশোনার জন্য বকাঝকা করলে সবার উপর অভিমান করে নিজরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।পরে সিলিংফ্যানে সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়।পরে আমরা দেখতে পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে দেখি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বাড্ডা আব্দুল্লাহবাগ এলাকার একটি বাসায় বিথী আক্তার (২০) নামে এক নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে।পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত দেড়টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী মোহাম্মদ আসাদ মিয়া জানান,আমাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি একপর্যায়ে অভিমান করে তার নিজরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দেয় । আমরা দেখতে পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে আমার স্ত্রীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, আমাদের গ্রামের বাড়ি নাটোর জেলা লালপুর উপজেলার উত্তর লালপুরে। বর্তমানে বাড্ডার আব্দুল্লাহবাগ এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকি।
এ দিকে খিলগাঁও থানার উত্তর গোড়ান এলাকার একটি বাসা থেকে সামিয়া আক্তার(১৪) নামের এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।মঙ্গলবার(৬ মে)দুপুরের দিকে উদ্ধার করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
খিলগাঁও থানার উপ -পরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস মাহমুদ জানান, আমরা খবর পেয়ে মুগদা হাসপাতালের ১০১নং রুম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করি। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, স্বজনদের কাছে থেকে জানতে পারি নিহত কিশোরী খিলগাঁও মেরাদিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।পারিবারিক বিষয় নিয়ে নিজ রুমে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওখানেই তার মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
বিএনএ/আজিজুল