বিএনএ, চট্টগ্রাম: সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাবার মরদেহ হাসপাতালে রেখে তাসমিন আক্তার এসএসসি পরীক্ষার হলে। বুধবার(৬র্মাচ) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর সাতকানিয়া আলী আহমদ-প্রাণহরি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
তাসমিন আক্তারের বাবা ভ্যান গাড়িচালক আহমদ হোসেন। তিনি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যান। তাদের বাড়ি উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণতোয়া এলাকায়।
তাসমিনের চাচা আবুল কাশেম বলেন, বড় ভাই ভ্যানগাড়িতে করে চট্টগ্রাম শহরে আসবাবপত্র আনা-নেওয়ার কাজ করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাতকানিয়ার দস্তিদার হাট থেকে আসবাবপত্র নিয়ে তিনি চট্টগ্রাম নগরের নন্দনকানন এলাকায় যান। তাঁর ভ্যানটি পটিয়ার ভেল্লাপাড়া সেতুর ওপর উঠলে দ্রুতগতির যাত্রীবাহী একটি বাস ভ্যানগাড়িতে ধাক্কা দেয়। এতে আহমদ হোসেন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। আজ সকাল সাতটার দিকে বড় ভাই আহমদ হোসেনের মৃত্যুর খবর আসে। এ সময় তাঁর এসএসসি পরীক্ষার্থী ভাতিজি পরীক্ষার হলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়ে। পরিবারের সদস্যরা বুঝিয়ে মেয়েকে পরীক্ষার হলে পাঠিয়েছেন।
তাসমিন বলেন, ‘আজ পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরলে বাবা আমার সঙ্গে দুপুরের ভাত খেতে চেয়েছিল। কিন্তু তা আর হলো না।’
পরীক্ষাকেন্দ্রটির সচিব ফরিদ আহমদ বলেন, বাবার লাশ হাসপাতালে রেখে মেয়েটি এখন পরীক্ষার হলে, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। শিক্ষকেরা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং যাতে ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখছেন।
ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুজিবুর রহমান বলেন, বাবার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে তাসমিন আক্তার পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে গিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ বাড়িতে আনার চেষ্টা চলছে।
বিএনএ নিউজ/রেহানা/এইচ.এম/হাসনা