30 C
আবহাওয়া
১২:৪০ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » আনোয়ারায় স্কুল ছাত্র আত্মহত্যা : বহাল তবিয়তে সুধাংশু চন্দ্র

আনোয়ারায় স্কুল ছাত্র আত্মহত্যা : বহাল তবিয়তে সুধাংশু চন্দ্র

আনোয়ারায় স্কুল ছাত্র আত্মহত্যা : বহাল তবিয়তে সুধাংশু চন্দ্র

বিএনএ, আনোয়ারা : চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এখনও স্বপদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন আনোয়ারা উপজেলার কৈনপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু চন্দ্র দেবনাথ ও অফিস সহকারি অনুপম পাল। শিক্ষা বোর্ডের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কৈনপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র দুর্জয় দাশকে অসহযোগিতা ও প্রতারণামূলক আচরণের দায়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়ে গত ৫ জানুয়ারি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি লঘুপতি সেনের বরাবরে চিঠি প্রেরণ করেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। ২ মাস অতিবাহিত হতে চললেও শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ এখনো বাস্তবায়ন করে নি স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি লঘুপতি সেন। এই নির্দেশনা পাওয়ার পরও এখনো পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারি বহাল তবিয়তে রয়েছে। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত শিক্ষার্থী দুর্জয়ের পরিবারসহ সহপাঠি ও স্থানীয়রা। তাদের দাবী বিদ্যালয়ের সভাপতি আর প্রধান শিক্ষকের মধ্যে মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে। যার কারণে বিদ্যালয় সভাপতি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। দুর্জয়ের সহপাঠি ও স্থানীয়রা অবিলম্বে ঘাতক প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারিকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিরও অপসারণ চেয়েছেন।

জানা গেছে, কৈনপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু চন্দ্র দেবনাথের গাফিলতি ও অসহযোগিতার কারণে ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র দুর্জয় দাশ (১৪) জেএসসি পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন করতে না পেরে ২০২০ সালের ২৯ জুন রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনার পর দুর্জয়ের পরিবার দুর্জয়ের আত্মহত্যার পরিবেশ সৃষ্টিকারী জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর বিষয়টি তদন্ত করেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড। তদন্তে প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারির প্রতারণামূলক আচরণের প্রমাণ পান শিক্ষাবোর্ড। তদন্ত কর্মকর্তা স্কুল পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী গত ৫ জানুয়ারি কৈনপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি লঘুপতি সেনের কাছে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি পাঠান। চিঠিতে উল্লেখ করেন, জেএসসি পরীক্ষার্থী দুর্জয় দাশের প্রতি প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারি অসহযোগিতা ও প্রতারণামূলক আচরণ করেছেন, যার প্রেক্ষিতে উক্ত ছাত্র পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেছে। প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারির এমন অসহযোগিতা ও প্রতারণার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হল। শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ দেয়ার ২ মাস পার হলেও এখনো প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারি বহাল তবিয়তে রয়েছে। এভাবে গতবছর দুর্জয় দাশের মত আরও ৮ জন শিক্ষার্থীকে প্রধান শিক্ষক জেএসসি পরীক্ষার রেজিট্রেশন করেনি বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এবং তসলিমা আকতার নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকেও প্রধান শিক্ষক রেজিট্রেশন না করায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। অনেক শিক্ষার্থী স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু চন্দ্র দেবনাথের কাছে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয়ে হয়রানি শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।

দুর্জয়ের পরিবার ও সহপাঠিরা জানান, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রধান শিক্ষককে বাঁচানোর জন্য লোক দেখানো শাস্তির কথা বলা হচ্ছে। বোর্ডের কোন আদেশ এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা ঘাতক প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারির অপসারণসহ দৃষ্টান্ত শাস্তি চাই এবং শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ বাস্তবায়ন চাই। আমাদের দাবি আদায় না হলে গণআন্দোলন ও ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন কিনা জানতে চাইলে কৈনপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি লঘুপতি সেন একেক সময় একেক ধরনের মন্তব্য করেন। গত ১০ জানুয়ারি বলেছিলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং মামলার কপিগুলো আমাদের দিয়ে সহযোগিতা করলে ব্যবস্থা নিতে পারব। এ ঘটনায় কোন মামলা হয়নি বলে জানা গেছে। এর কয়েকদিন পর বলেন, এ বিষয়ে আমরা আইনজীবির সাথে যোগাযোগ করে তারপর ব্যবস্থা নেব। গত রবিবার যোগাযোগ করা হলে সভাপতি বলেন, প্রধান শিক্ষকের দুই মাসের বেতন কর্তন এবং সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে শিক্ষা বোর্ড ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়ার পর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থায় নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড.বিপ্লব গাঙ্গুলী বলেন, তদন্তের পর প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্কুলের সভাপতি বরাবরে বোর্ডের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে এখনো কোন চিঠি স্কুল পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে শিক্ষাবোর্ড পায়নি। আমরা পুনরায় বোর্ডের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আরেকটি চিঠি ইস্যু করব। এরপরেও কোন জবাব না পেলে বোর্ড তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।

বিএনএনিউজ/এনামুল হক, জেবি

Loading


শিরোনাম বিএনএ