ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার শাহবাজপুর গ্রামে। পিতার নাম-আবদুল হামিদ, মাতা-রহিমা খাতুন। ১৯৪৭ সালে যশোরের নড়াইল মহকুমা হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (মেধাতালিকায় ষোড়শ) পাশ করেন। ১৯৪৯ সালে আইএসসি (মেধাতালিকায় দ্বাদশ) এবং ১৯৫৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ছাত্র জীবন থেকেই সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
তিনি বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন এবং একজন সক্রিয় কর্মী। ভাষা-আন্দোলনে ও প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার কারণে তাঁর শিক্ষা জীবন বার বার বিপর্যস্ত হয়েছে। বিভিন্ন সময় তিনি আত্মগোপন করতে বাধ্য হন। ১৯৬০ সালে ঔষধ প্রতিষ্ঠান ‘অ্যালবার্ট ডেভিড’-এ টেকিনিক্যাল তথ্য বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গড়ে তোলেন স্বদেশি ঔষধ কোম্পানি ‘ওরিয়ন ল্যাবরেটেরিজ’। ১৯৯৬ সালে এই সংস্থার চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পেশা ও জীবিকার চেয়ে সাহিত্যের নেশাই তাঁর কাছে মুখ্য।
বর্তমানে সার্বক্ষণিক সাহিত্য কর্ম ও লেখালেখিতে নিয়োজিত-একাধিক সাহিত্য ও বিজ্ঞান পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন। ভাষা-আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ ও গবেষণার ফলে এ বিষয়ে তাঁর একাধিক তথ্যবহুল গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এখন পুরো-পুরি সাহিত্য কর্মে সক্রিয়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ১০০। তিনি রবীন্দ্রকেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলা একাডেমীর ফেলো এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জীবন সদস্য। তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯২ সালে অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। কলকাতায় টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে পেয়েছেন বরীন্দ্রতত্ত্বাচর্য উপাধি।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক(৩) অলি আহাদ পর্ব : ০২