বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুল হাসান মিশন (২১) আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার ( ৫ মার্চ) রাতে খাগড়াছড়ির রামগড় থানার ফেনীর কুল গ্রামে নিজ বাড়িতে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। নাইমুল হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। সকালে তার ছোটভাই রুমে ঢুকতে চাইলে অনেক ডাকাডাকির পরও না খোলায় পরে দরজা ভেঙে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে মিশনের নিথরদেহ।
আত্মহত্যা করার আগে মিশন লিখে গেছেন এক হৃদয়বিদারক সুইসাইড নোট। সেখানে তিনি লিখেছেন, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমার বেঁচে থাকার জন্য কোনো ইচ্ছা নেই। তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। ডারউইন বলেছিলেন Survival of the fittest. But I not even fit. আমার জন্য কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন পারলে মাফ করে দিয়েন। আম্মু আমাকে মাফ করে দিয়েন। লিমনের খেয়াল রাখিয়েন। আব্বু আমাকে সফল করার জন্য অনেক কিছু সহ্য করেছেন। আমি পারিনি তাই ক্ষমাপ্রার্থী। এই দুনিয়া আমার জন্য নয়। সবাই পারলে আমাকে মাফ করে দিবেন। তবে একটু বড় অক্ষরে সুইসাইড নোটে লিখেন ‘বিদায়’।’
মিশনের বাল্যবন্ধু আরমান মজুমদার জানান, রাত দুইটার দিকে নাইমুল রুম থেকে বের হয়ে মা ও ভাইকে দেখে আসে। পরে পানি খেয়ে আধা ঘণ্টা ঘরের বাইরে অবস্থান করে। এরপর সম্ভবত তিনটার দিকে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তার মা ফজরের নামাজ পড়তে উঠলে রুমে বাতি জ্বলতে দেখেন। সাধারণত সে বাতি জ্বালিয়ে ঘুমায় না। এ সময় তাকে অনেক ডাকাডাকির পরও দরজা না খুললে সকাল সাতটার দিকে দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এ সময় রুমে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
রামগড় থানার পুলিশের পরিদর্শক-তদন্ত মো. মনির হোসেন বলেন, চবির ছাত্র মিশন দুই বছর ধরে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। স্কয়ার হাসপাতালে মানসিক চিকিৎসা নিয়ে ডাক্তারের চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে তিনি আত্মহত্যা করেন। সকালে তার মা ও ভাই পুলিশকে খবর দেন। প্রাথমিকভাবে এটাকে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
বিএনএনিউজ/আমিন