31 C
আবহাওয়া
১১:৫৬ অপরাহ্ণ - মে ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঘুমধুম সীমান্তে অপেক্ষামান হাজার হাজার রোহিঙ্গা-চাকমা 

ঘুমধুম সীমান্তে অপেক্ষামান হাজার হাজার রোহিঙ্গা-চাকমা 


বিএনএ : বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মিদের গোলাগুলি ও সংঘাত-সংঘর্ষ চলছে। এ অবস্থায় শত শত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিচ্ছে।

মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)র ১১৫ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রবেশের জন্য অপেক্ষায় আছে আরও ১১৪ জন। এ নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন বিজিপির ২২৯ জন সদস্য।

মিয়ানমার -বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ঢেঁকিবুনিয়া এলাকার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ আরাকান আর্মিসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াই বেড়ে যাওয়ার পর প্রাণ বাঁচাতে সেদেশের বিজিপি সদস্য, সেনা সদস্য, শুল্ক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসছেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী ও শিশু রয়েছেন।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক জান্তা।

এরপর আরাকান আর্মিসহ কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় জান্তার অনুগত সেনাদের পরাজয়ের খবর আসতে থাকে। সেনাবাহিনীর ঘাঁটি ও নিয়ন্ত্রিত এলাকাও দখলে নিতে শুরু করে বিদ্রোহীরা।

সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলো এখন জনমানব শুন্য।

নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতর থেকে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। বেতবুনিয়া সীমান্তের ওপার থেকে কিছুক্ষণ পর পর থেমে থেমে এমন ভয়াবহ শব্দ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি স্থানীয়দের নিরাপদে থাকতে বললেও বেশিরভাগই তাদের সেই নির্দেশনা মানছেন না। স্থানীয়দের অনেকেই স্কুল প্রাঙ্গণে ভিড় করছেন। ইচ্ছামতো চলাফেরা করছেন।

বিবিসি স্থানীয় লোকজনের বরাতে জানিয়েছে, সীমান্তের শূন্য রেখায় তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন। কিন্তু সীমান্ত রেখায় হওয়ায় কেউ তাদের দেখতে বা আনতে যেতে পারছে না। মরদেহগুলো কাদের সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মিয়ানমারের ছোঁড়া মর্টারশেল আঘাত হেনেছে ঘুমধুম বেতবুনিয়া বাজার সংলগ্ন ছৈয়দ নুর শিকদারের বসতঘরে! ভেঙে গেছে জানালার কাচের আয়না, ফাটল ধরেছে বাড়ির দেওয়ালে।

এর আগে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জলপাইতলী সীমান্তে সোমবার দুপুরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে বাংলাদেশি এক নারীসহ দুজন নিহত হন।এজন্য মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মুহাম্মদ মাইনুল কবির মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে এক প্রতিবাদ-লিপি পেশ করেন।

সীমান্তে চলমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের নিজস্ব সীমানায় গোলা নিক্ষেপের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের কাছে। বাংলাদেশে মিয়ানমারের গোলাবারুদ এসে পড়ার ঘটনা দুঃখজনক বলে বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তার দফতরে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যসহ অন্যান্যদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। একই সঙ্গে সীমান্তরক্ষীদেরও ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন।”

বিএনএ/শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচ.এম/এইচমুন্নী

 

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ