বিএনএ, চট্টগ্রাম : ধর্ষণ ও হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আলী আকবরকে (২৯) আটক করেছে র্যাব-৭। বৃহস্পতিবার (৪ মে) চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা হতে তাকে আটক করা হয় ।
র্যাব-৭ জানায় , নিহত ভিকটিম এবং আসামী আলী আজগর ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর তারা চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর ভিকটিম তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি আলী আকবর ব্যবসার জন্য ভিকটিমের বাবার কাছে ১ লক্ষ টাকা চায়। এ সময় তার বাবা টাকা দিতে অপারগতা জানান।। ঐদিন দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে ভিকটিম বাড়ির কাউকে কিছু না বলে তার বাবার বাড়িতে হতে চলে আসে। ভিকটিমের বাবা মনে করেন তার মেয়ে স্বামীর কাছে চলে গেছে।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি সকালে ভুজপুর থানার বাদুরখিল এলাকার একটি খামার বাড়ির গাছে ওড়না দিয়ে ফাঁস দেয়া অবস্থায় ভিকটিমের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ভুজপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয় ।
ভিকটিমের মৃতদেহ পাওয়ার পর হতে তার স্বামী আলী আকবর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। পুলিশ মামলা তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি আসামী আলী আকবর এর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ ভিকটিমকে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে আসামীকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী জিজ্ঞাবাসাবাদে জানায়, ২০১৫ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ভিকটিমের সাথে তাদের প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন হয়। তাদের সম্পর্কের এক পর্যায়ে আলী আকবর ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে বাড়ি হতে অন্যত্র নিয়ে আসে এবং সেখানে কিছুদিন থাকার পর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিবাহের হলফনামা সম্পাদন করে। বিয়ের কিছুদিন পর আলী আকবর ব্যবসা করার জন্য ভিকটিমকে তার বাবার কাছ হতে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে বলে এবং টাকার জন্য ভিকটিমকে প্রায় সময়ই শারীরিক নির্যাতন করত। কিন্তু ভিকটিমের বাবা একজন দরিদ্র কৃষক হওয়ায় টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলী আকবর ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আত্মহত্য বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য ওড়না দিয়ে ভিকটিমকে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
আসামী জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়, তিনি তার পূর্বের স্ত্রীর কথা গোপন রেখেই ভিকটিমকে বিয়ে করেন এবং ভিকটিমকে ৮ দিন যাবৎ ভুজপুর থানাধীন বাদুরখিল এলাকার একটি খামারবাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন এবং ২০ জানুয়ারি ভিকটিমকে হত্যা করে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেন। এছাড়া আসামি ভুক্তভোগী তরুণীকে বিয়ে করলেও তা নিবন্ধন করেননি এবং নোটারি পাবলিকের বিয়ের ঘোষণাটিও মিথ্যা ছিল।
গ্রেফতার আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএনএ/ ওজি, রেহেনা ইয়াসমিন, শিরীন সুলতানা