বিএনএ ঢাকা: মহামারি করোনাসহ বিভিন্ন সময়ে মানবসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে এখন থেকেই নিজেদের গড়ে তোলার জন্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
সে সময় তিনি আরও বলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা করোনাকালীন মরদেহ দাফন, রোগীদের হাসপাতালে নেয়া, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দেয়ার মতো মানবিক কাজ করেছে। তারাই মুজিব আদর্শের আসল সৈনিক, যারা এই কাজগুলো করেছে। দেশে যখনই কোন দুর্যোগ হয়েছে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে ছুটে গেছে। লকডাউনে কৃষকদের ধান কাটতে সাহায্য করছে ছাত্রলীগ। মানুষের জন্য কাজ করাই ছাত্রলীগের মূল দায়িত্ব। এটাই রাজনৈতিক নেতাদের কাজ এবং তা ছাত্রলীগকে মনে রাখতে হবে। করোনার মহামারিতে ছাত্রলীগ একটা রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যেভাবে দাঁড়িয়েছিল, সেজন্য প্রত্যেক নেতাকর্মীকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগের মূলনীতি মেনে সবাইকে পড়াশোনা করতে হবে। কোনোভাবেই বিভ্রান্তির পথে যাওয়া যাবেনা। নিজেদেরকে সন্ত্রাস, দুর্নীতির ঊর্ধ্বে রেখে দেশ যেন শান্তির পথে, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে। প্রযুক্তির এই যুগে মানুষের কর্মদক্ষতারও পরিবর্তন ঘটবে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। কাজেই দেশের তরুণ সমাজকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এগুতে হবে। কম্পিউটার শিক্ষা, প্রযুক্তি শিক্ষা, ইন্টারনেট ব্যবহার, সকলের হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দেয়া, সবই আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আজকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তির ব্যবহার পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। কাজেই মানুষকে ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। মানুষের দৃষ্টি খুলে গেছে। কেননা হাতের মুঠোয় পৃথিবী এসে গেছে।
খালেদা জিয়ার রাজনীতির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী ধমক দিয়েছিল যে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে ছাত্রদলের অস্ত্রই নাকি যথেষ্ট। তিনি ছাত্রদের অস্ত্র, বোমা, গুলি দিয়েছিলেন। এটি জিয়াউর রহমানের আমল থেকে শুরু। এরশাদ, খালেদা জিয়াও তাই করেছে। আর অভিভাবক হিসেবে দেশের জন্য কাজ করতে এবং পড়াশুনা শিখতে তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাগজ-কলম তুলে দিয়েছেন বলে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
শিক্ষা শান্তি প্রগতি ছাত্রলীগের এই মূলনীতি মেনে সবাইকে পড়াশোনার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, অল্পশিক্ষিত বা স্বশিক্ষিত বা অশিক্ষিত নেতৃত্ব একটা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আজকে সেই ধ্বংসস্তুপ থেকে একটি দেশকে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছে।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান। সে সময় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি