29 C
আবহাওয়া
৭:৪০ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলে কুবি শিক্ষকদের চিঠি

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলে কুবি শিক্ষকদের চিঠি


বিএনএ, কুবি : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের জন্য উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গত ২৭ নভেম্বর ওই চিঠি দিলেও রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে এখনো উপাচার্যের কার্যালয় থেকে শিক্ষকদের চিঠি প্রাপ্তি স্বীকারের অনুলিপি দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

যদিও বিষয়টিতে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন দাবি করেছেন, ‘আমার কাছে চিঠি আসা মানেই গ্রহণ করা। ব্যস্ততার জন্য হয়তো তাঁরা (উপাচার্যের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা) স্বাক্ষর করতে পারেনি।

এর আগে গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কুবিতে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ‘অভিনব কৌশল’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, নির্দিষ্ট এক প্রার্থীর শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকায় একই সঙ্গে দুই নীতি অবলম্বন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কুবি। ফলে এই বিজ্ঞপ্তি কোনোভাবেই বিধিসম্মত নয় বলেও মন্তব্য করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য বরাবর দেওয়া চিঠিতে কুবি শিক্ষকবৃন্দ বলেন, গত ২ নভেম্বর প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের এক বিজ্ঞপ্তিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি বিশেষ শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। শর্তটি হলো- ‘এমফিল/সমমান বা পিএইচডি ডিগ্রিধারী অথবা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম দু’বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসহ স্বীকৃত জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ আছে, এমন প্রার্থীদের জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক নির্ধারিত যোগ্যতা প্রযোজ্য হবে।’

চিঠিতে বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন শর্ত আরোপ করতে হলে তা অবশ্যই বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি, অনুষদের নির্বাহী কমিটি, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ ছাড়াও সর্বোপরি সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে করা আইনসঙ্গত। অথচ এই বিশেষ শর্তটি উল্লেখিত ফোরামগুলোর কোথাও আলোচিত কিংবা অনুমোদিত হয়নি। যা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের প্রচলিত শর্তের পরিপন্থী। এছাড়া ইউজিসির নির্দেশিকাও উল্লেখিত যোগ্যতাকে অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচনা করে। এ জন্য বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলের শর্ত কোনোভাবেই শিথিলযোগ্য হবে না বলা হয়েছে।

শিক্ষকদের দেওয়া ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ধারা ১৯ এর উপ-দফা ২ এর ‘ঝ’ ও ‘ফ’তে উল্লেখ আছে- নিয়োগের যে কোনো শর্ত সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। উল্লেখিত বিশেষ শর্তটি সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি। ফলে বিজ্ঞপ্তিটি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যা ইউজিসিও পৃথক একটি পত্রে উল্লেখ করেছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ইউজিসি কর্তৃক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নয়নের ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশিকা প্রেরণ সংক্রান্ত পত্রে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে- কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান নীতিমালায় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নির্দেশিকায় (ইউজিসি প্রেরিত) উল্লিখিত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার চাইতে বেশি বা একই থাকলে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নয়নের নীতিমালা প্রণয়ন আবশ্যক নয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের শর্ত ইউজিসি কর্তৃক নির্ধারিত শর্তের চেয়ে বেশি। তাই ইউজিসি নির্ধারিত শর্তটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়।

চিঠিতে শিক্ষকরা আরও বলেন, তড়িঘড়ি করে নিয়মবর্হিভূতভাবে প্রকাশিত এমন বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে না এবং তুলনামূলকভাবে কম যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুযোগ পাবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুনগত মান বিনষ্ট হবে।

এদিকে, উপাচার্যের কার্যালয় থেকে এখনো চিঠি প্রাপ্তি স্বীকারের অনুলিপি দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা। যদিও এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন দাবি করেছেন, ‘চিঠিটি এখনও পড়ার সময় পাইনি। এটি সম্ভবত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ছিল। আমরা গবেষণায় গুরুত্ব দেওয়ার জন্য ওই শর্তটি যুক্ত করেছি। এতে ইউজিসির শর্তের ব্যত্যয় ঘটেনি।’

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি (নতুন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য) কমিটি গঠন করেছি। এটি শুধুমাত্র একটি প্রতিবেদনের বিষয়। যে কোনো সময় এটি পাশ হয়ে যাবে।’

বিএনএনিউজ/হাবিবুর রহমান / এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ