26 C
আবহাওয়া
১১:১৬ অপরাহ্ণ - মে ১১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে আজ

পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে আজ

পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন

বিএনএ: আরেক স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু অতিক্রম করে ভাঙা-মাওয়া পরীক্ষামূলক রেল চলবে আজ। আর ঢাকা থেকে ভাঙা পর্যন্ত সরাসরি যাত্রী নিয়ে রেলপথে ট্রেন চলবে সেপ্টেম্বরে। তবে আগামী বছর ট্রেন চলবে ঢাকা-যশোর রেলপথে। পদ্মা সেতু ঘিরে দেশের আধুনিক রেল নেটওয়ার্কের খবরে আনন্দে উচ্ছ্বসিত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।

পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহম্মেদ জানান, ‘গ্যাংকার দিয়ে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ৪১ কিলোমিটার রেলপথ পরীক্ষা করে দেখা হবে। এ পথে ডিজাইন-স্পিড ১২০ কিলোমিটার থাকলেও ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে টেস্ট-রান করা হবে।

পদ্মা সেতুর রেলপথ চালু আরও এক শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধি করবে উল্লেখ করে সাঈদ আহম্মেদ বলেন, ট্রান্স এশিয়া রেলপথের সঙ্গে এ লাইনটি যুক্ত হবে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পনি (সিআরইসি)। আর পুরো প্রকল্প তদারকি করছে সিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন জানান, ‘পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাংকার ট্রেনটি ভাঙ্গা থেকে রওনা হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে মাওয়া আসবে। ট্রেনটি মূলত নির্মিত রেলপথ ইন্সপেকশনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এই ট্রেনে ভ্রমণ করে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন নির্মিত রেলপথসহ প্রকল্পের সার্বিক কাজ পরিদর্শন করবেন। পুরোপুরি চালু হওয়ার আগে এ রেলপথ দিয়ে আমরা প্রকল্পের বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হবে।

আফজাল হোসেন জানান, ২০২৪ সালের জুনে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথটি চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া ট্রেন চলবে। একইভাবে ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে প্রতিদিন সাত জোড়া ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে প্রতিদিন চলবে পাঁচ জোড়া ট্রেন। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। ‘ওয়ান-ডিরেকশন’ বা একমুখী চলাচলের ওপর ভিত্তি করে প্রাক্কলনটি তৈরি করেছে সিআরইসি।

আফজাল হোসেন জানান, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরনো রেল স্টেশন থেকে পরীক্ষামূলক ট্র্যাককারটি রওনা হওয়ার কথা রয়েছে দুপুর ১২টায়। আর এটি পদ্মা সেতু অতিক্রিম করে দুপুর ২টায় মাওয়া স্টেশনে এসে পৌঁছাবে। এই ট্রেনে থাকবেন রেলপথমন্ত্রী নরুল ইসলাম সুজন এমপি। গত ২৯ মার্চ সেতুর ২৫ নম্বর খুঁটির কাছে বাকি থাকা ৭ মিটার রেলপথ নির্মাণ শেষ হওয়ার ৭২ ঘন্টা পরও রেল ট্র্যাক মহড়া হিসাবে সেতুতে চলাচল করেছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছেন।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, যশোর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ লেভেল ক্রসিংবিহীন রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন নির্মাণ। আর সেই রেলপথের কাজ শেষ হওয়ায় দেশের আধুনিক রেল নেটওয়ার্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় যশোরের সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

এই প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে। চীন সরকার মনোনীত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড চায়না জিটুজি সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি শেষ হলে রেল যোগাযোগব্যবস্থায় দেশের মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা এবং পদ্মা সেতুর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলার নতুন এলাকাজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ঢাকা-যশোর-খুলনার মধ্যে ২১২ দশমিক ০৫ কিলোমিটার সংক্ষিপ্ত রুট এবং উন্নত পরিচালন সুবিধার বিকল্প রেলপথ সংযোগ স্থাপিত হবে।

এটি বাংলাদেশে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি সাব-রুট স্থাপন এবং জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মালবাহী এবং বিজি কনটেইনার ট্রেন পরিসেবা চালু করবে। এই রুটটি কনটেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে গতি এবং লোড সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হবে। সরকার ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের অনুমোদন দেয়। পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে নয় মাস আগে। এবার ট্রেন চলাচলের জন্যও প্রস্তুত দেশের দীর্ঘতম এ সেতু।

বিএনএ নিউজ/এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ