বিএনএ,চট্টগ্রাম: কয়লা সংকটে কক্সবাজারের মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১২শ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটের উৎপাদন গত তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। পুরো নভেম্বর মাস কয়লা সংকটে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ থাকবে।তবে সব প্রক্রিয়া শেষ করে নভেম্বরের শেষ দিকে কয়লা আমদানি করার চেষ্টা চলছে।
প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ৩১ অক্টোবর থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিট কমিশনিংয়ের জন্য জাপানের সুমিতমো কর্পোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনা হয়। চুক্তি অনুযায়ী সুমিতমো কর্পোরেশন কয়লার সর্বশেষ সরবরাহ দেয় আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে। আগস্ট মাসেই জাপানি প্রতিষ্ঠানটির সাথে কয়লা সরবরাহের চুক্তি শেষ হয়। এরপর মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে তিন বছরের কয়লা সরবরাহের জন্য সিপিজিসিবিএল আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় ১০ মাস দেরি হয়ে যায়। দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় গত জুলাইয়ে। সেই আদেশটি পরে উচ্চ আদালতে স্থগিত করা হলেও দীর্ঘমেয়াদে কয়লা আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। তবে সব প্রক্রিয়া শেষ করে নভেম্বরের শেষ দিকে কয়লা আমদানি করার চেষ্টা চলছে। আশা করছি নভেম্বরের শেষের দিকে কয়লা আমদানি করা গেলে আবার চালু হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বাঁশখালী এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টে কয়লা সংকট আছে। বাঁশখালী এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের ১৩০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটের মধ্যে কয়লা সংকটের কারণে একটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। অপর একটি ইউনিট থেকে সকালে ৪১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও সন্ধ্যায় ৩৯৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। গ্যাস এবং তেল সংকটে চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। গ্যাস সংকটে রাউজান তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২১০ মেগাওয়াটের দুটি কেন্দ্র এবং তেল সংকটে শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫ নম্বর ইউনিট বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এবং অপর ইউনিট ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চালু হয়। এই প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এখন পর্যন্ত জাপানের সুমিতমো কর্পোরেশনের মাধ্যমে আনা হয় ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা। সেই কয়লা পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। তাই ৩১ অক্টোবর থেকে এই কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিএনএনিউজ / আরএস