24 C
আবহাওয়া
৫:০৮ পূর্বাহ্ণ - মে ৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দফা একটাই, এই সরকারের পতন চাই: মির্জা ফখরুল

দফা একটাই, এই সরকারের পতন চাই: মির্জা ফখরুল

দফা একটাই, এই সরকারের পতন চাই: মির্জা ফখরুল

বিএনএ ডেস্ক: ‘অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে বিএনপির সাথে একমত হয়েছে এলডিপি’। এ কথা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৩ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর মহাখারী ডিওএইচএসে এলডিপি সভাপতি ড. কর্নেল অব. অলি আহমদ বীর বিক্রমের বাসায় যান মির্জা ফখরুল ইসলাম। সেখানে এলডিপির সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিফ্রিং করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও কর্নেল অলি আহমদ।

এসময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বৈরাচারী, কতৃত্ববাদী অবৈধ সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশের প্রবীণ জননেতা কর্নেল অলি সাহেবের নেতৃত্বে এলডিপি’র সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনা হয়েছে। এটি নিয়ে অন্যান্য দলের সঙ্গেও কথা হবে। জানান, আলোচনা শেষ হলে সবাই একমত হয়ে আন্দোলনের দাবি জনগণের সামনে উত্থাপন করবো এবং দ্বিতীয় ধাপে এগিয়ে যাবো।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি ও এলডিপি যে বিষয়গুলোতে একমত, সেগুলো হচ্ছে আমরা সবাই মনে করি যেহেতু এই সরকার পুরোপুরি অনির্বাচিত একটি সরকার, কতৃত্ববাদী সরকার। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এরা হরণ করেছে। সে কারণে এই সরকারের পদত্যাগ প্রয়োজন। সেজন্য আমরা দাবি করেছি সরকার পদত্যাগ করে একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার অথবা একটা অন্তর্বতীকালিন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এরপর সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে।

ফখরুল বলেন, নতুন কমিশনের অধীনে একটি নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। তারা জনগণের সংসদ ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন। একই সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সকল বন্দিদের মুক্তি ও ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এর সঙ্গে দ্রব্যমূল্য, জ্বালানী তেলের মূল্যর বিষয়গুলো আছে। সরকারের দুর্নীতির বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছি। আমরা আশা করি এক মতে পৌঁছাবো। আমরা এই দাবিগুলো নিয়ে একসাথে যুগপৎ আন্দোলন করবো।

এসময় কর্নেল অলি আহমদ বলেন, জাতির একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা জাতিকে মুক্ত করার জন্য এখানে একত্রিত হয়েছি। বহুদিন থেকে বিএনপি এককভাবে তাদের পুরো শক্তি দিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে লিপ্ত আছে। এখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে চাই। সেটা নিয়ে অনেকগুলো বক্তব্য এসেছে।

তিনি বলেন, এই সরকার গত ১৪বছর যাবত ক্ষমতায়। তারা মানুষের ওপর নির্যাতন করছে, সুশাসনের অভাব, কেউ ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। ঘর থেকে কেউ বের হতে পারে না। যারা রাজনীতি করে তারা মিটিং মিছিল করার সুযোগ পাচ্ছে না। আমরা যে আমাদের মতামত দেব, আপনারা সাংবাদিক হিসেবে আপনাদের মতামত দেবেন সেই সুযোগ এদেশে নেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় সব দল বন্ধ করে একদলীয় শাসন বাকশাল করেছিল উল্লেখ করে কর্নেল অলি বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেন। সাংবাদিকদের কোনো অধিকার ছিল না, পত্রিকা বন্ধ ছিল সেগুলি খুলে দিয়েছিল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিল বেগম খালেদা জিয়া। তিনি নিজে তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাকেও আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জেলে আবদ্ধ রেখেছে।

তিনি বলেন, আমরা নিঃশর্তভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় যেসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে তাদের মামলা প্রত্যাহার চাই। যাদের জেলে রেখেছে তাদের মুক্তি চাই। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে সেটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যা যা করা দরকার সেটা কামনা করি। বিশেষ করে ডিজেল, পেট্রোল অকটেনের মূল্যবৃদ্ধিতে সমাজে এফেক্ট হয়েছে। এটার দাম কমাতে হবে।

কর্নেল অলি বলেন, বিএনপি ইতোমধ্যে স্পষ্ট ভাষায় বলেছে এই সরকারের আওতায় কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। অতীতে যেকোনো সময় আমরা ভুল করেছি, যার কারণে আমাদের খেসারত দিতে হচ্ছে। এবার আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নতুন সরকার এসে প্রশাসন ঠিক করবে, মানুষ যখন প্রস্তুত হবে, জনগণ যখন নির্ভয়ে তাদের ভোট দিতে পারবে, তখন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।

অলি আহমেদ বলেন, বর্তমান অবস্থায় যদি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ নির্বাচিত হবে না। কারণ প্রত্যেকটি জায়গায় ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের প্রাধান্য। এই সরকার কবে যাবে, নতুন সরকার কবে আসবে এটাই হবে একদফা। বাকিগুলি আনুষঙ্গিক। সংসদ বিলুপ্তি করতে হবে। যারা বিতর্কিত তাদেরকে ক্ষমতা থেকে বের করতে হবে। এখানে মায়া মমতা দিয়ে দেশ পরিচালনা করলে হবে না।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে এলডিপির পক্ষে ছিলেন, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল আলম, ড. নেয়ামুল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, অ্যাডভোকেট মাহবুব মোর্শেদ।

বিএনএ/এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ