বিএনএ, ঢাকা : আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। ৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর মুসলিম সম্প্রদায় আজ ঈদ উদযাপন করছেন।
রাজধানীসহ সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ঈদ জামাতের প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত দুই বছর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত না হলেও এবার এখানে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদ জামাতও এবার অনুষ্ঠিত হবে। তবে, আবহাওয়া প্রতিকূল বা অন্য কোনো অনিবার্য কারণে এ জামাত সম্ভব না হলে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯ টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ।
বিচারপতিগণ, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবর্গ, মুসলিম বিশ্বের কূটনীতিকবৃন্দ জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। ঈদগাহে মহিলাদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি, আধা-সরকারি ভবন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সকল স্থাপনাসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় পতাকা ও ‘ঈদ মোবারক’ খচিত ব্যানার মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোষ্টে প্রদর্শন করা হচ্ছে। সরকারি ভবনসমূহসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
সারাদেশে বিভাগ বা জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহের প্রধানগণ জাতীয় কর্মসূচীর আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচী প্রনয়ণ করে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমসমূহ যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার ও সংবাদপত্রে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করছে।
ঈদ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয় কেন্দ্র, সেইফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র, দুঃস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশন যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে। এ উপলক্ষে সারাদেশে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ঈদের দিন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকেটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সকল শিশু পার্কে প্রবেশ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঈদের দিন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের বিনাটিকেটে যাদুঘর, আহসান মঞ্জিল, লালবাগের কেল্লা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান প্রবেশ এবং তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শিশুদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে- সকাল ৭টায়, এরপর পর্যায়ক্রমে ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে শেষ ঈদ জামাত।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমানের ইমামতিতে প্রথম জামাত সকাল ৭টা অনুষ্ঠিত হবে। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. ইসহাক।
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী’র ইমামতিতে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা অনুষ্ঠিত হবে। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারীর ইমামতিতে তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেয মো. নাছির উল্লাহ।
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হকের ইমামতিতে চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মোঃ শহিদ উল্লাহ।
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিউদ্দিন কাসেমের ইমামতিতে পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।
উপরে উল্লেখিত ৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতী মাওলানা মো. আব্দুল্লাহ।
উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান জানান, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি করে মোট ২৭০টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।