31 C
আবহাওয়া
১:৩৫ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ইসলামপুরে গৃহবধূ হত্যার মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

ইসলামপুরে গৃহবধূ হত্যার মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

ইসলামপুরে নববধূ হত্যার ঘটনায় মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

বিএনএ, ঈদগাঁও (কক্সবাজার): কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইসলামপুরে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা গ্রহণ না করা এবং জোরপূর্বক আপোষনামা নেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার।শুক্রবার( ৩০ এপ্রিল) বিকালে চৌফলদন্ডীস্থ বসত বাড়ির সামনে এ সংবাদ সম্মেলনটি করা হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে নিহতের মা বাবা ভাইসহ প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের বাবা নুরুল আলম ও ভাই নাছির উদ্দীন।

এ সময় নাছির উদ্দীন বলেন, গত ২৬ এপ্রিল মধ্য রাতে তার বোন সিমা আক্তার (১৮) কে যৌতুক ও ইয়াবা পাচারে রাজি না হওয়ায় মারধর করে হত্যা করে স্বামী মোহাম্মদ হাসান, তার মা রোকসানা আক্তারসহ ৬/৭ জন যৌতুক লোভী স্বজন। অবস্থা বেগতিক দেখে বোন সিমা আক্তারকে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিন তাড়াহুড়ো করে স্বামী মোহাম্মদ হাসানের ঘরে নিয়ে গিয়ে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে টিনের ভীমের সাথে লাগিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়। রাতের ঘটনা হলেও পরদিন বিকালে নিহতের স্বজনদের সংবাদ পাঠায় সিমা মারা গেছে। পরে মা বাবাসহ অপরাপর স্বজনরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পান সিমা আক্তারের শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন। তাদের সন্দেহ হওয়ায় খবর দেয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে সকালে মর্গে পাঠানো হবে আশ্বাস দেয়।
নাছির উদ্দিন আরো বলেন, এমন সময়ে তার বাবা নুরুল আলমসহ অন্যদের ডেকে আনেন মৃতদেহ উদ্ধারকারী থানার এসআই রেজাউল করিম। এদিন রাতে এসআই রেজাউল করিম অভিযুক্তদের ডেকে এনে আপোষের কথাবার্তা বলেন। এক পর্যায়ে মামলা না করতে বারণ করে জোরপূর্বক আপোষনামা আদায় করে নেন। তখন তার বাবা মানসিক ভাবে সুস্থ ছিল না দাবী করেন নাছির উদ্দীন। এদিকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে ২৮ এপ্রিল বিকালে চৌফলদন্ডী উত্তর পাড়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে দাফন করা হয় সিমাকে।
বাবা নুরুল আলম বলেন, আমি এবং আমার পরিবারের সবাই শোকাহত, মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলাম না। সেসময়ে পুলিশ জোরপূর্বক আপোষনামা আদায় করে নেন। তখন সাদা কাগজে কি লেখা ছিল তাকে পড়ে শুনানো হয়নি বলেও দাবী করেন। দাফন কাফনের কাজে ব্যস্ত থাকায় পরদিন ২৯ এপ্রিল নিহত সিমা আক্তারের ভাই নাছির উদ্দীন বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামী করে ঈদগাঁও থানায় এজাহার জমা দিতে গেলে নানা তালবাহানা শুরু করে থানা কর্তৃপক্ষ। তখনও এসআই রেজাউল করিম অভিযুক্তদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বসে সমাধানের কথা জানান।
বাদী নাছির উদ্দীন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, সুরহতাল রিপোর্ট তৈরিকারী কর্মকর্তার বর্ণনা মতে বাম কাঁধে উপরে থেতলানো কালো জখম, বাম হাতের বাহুতে থেতলানো কালো জখম, গলার সামনের অংশে ফাঁসের দাগ আছে, ডান হাতের বাহুতে জখমের কালো দাগ, বুকের ডান পাশে উপরের অংশে জখমের কালো দাগ, পিঠে জখমের কালো দাগ থাকা সত্বেও মামলা গ্রহণ না করা অপরাধীদের প্রশ্রয় দেয়ার সামিল।

উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল মধ্যে রাতে ইসলামপুরের নাপিত খালী দুদু মিয়ার ঘোনায় জাফর আলমের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসান ও মা রোকসানা আক্তার, মেয়ে তানিয়া আক্তার, ইয়াছিনের স্ত্রী রুমা আক্তার, ইউনুছের ছেলে রাকিব, জাফর আলম, মৃত বাবুলের স্ত্রী খোরশিদা মিলে মারধর করে হত্যা করে সিমাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবদুল হালিম জানান, ঘটনার দিনই নিহতের বাবা স্বেচ্ছায় আপোষনামা দিয়েছে মামলা মোকদ্দমা করবে না বলে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা ধোঁয়াশা কাটতে পুলিশ ময়না তদন্ত করেছে।একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে যদি হত্যার প্রমাণ আসে তাহলে মামলা রেকর্ড পুর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। নিহতের পরিবার ন্যায় বিচার পেতে যা যা করতে হয় থানা পুলিশ তা করবে। কাউকে হয়রানি করা হবে না।
ওসি আরো বলেন, ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে নিহতের স্বজনদের।

বিএনএ/ মোঃ রেজাউল করিম,ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ