31 C
আবহাওয়া
১১:১০ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » টিকটকের আড়ালে মানব পাচার করতো হৃদয়: পুলিশ

টিকটকের আড়ালে মানব পাচার করতো হৃদয়: পুলিশ

টিকটকের আড়ালে মানব পাচার করতো হৃদয়: পুলিশ

বিএনএ ঢাকা: ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ একটি আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভারত ও  দুবাইসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই চক্রটি বিস্তৃত বলে শনিবার(২৯ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার(ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ।

তিনি বলেন, নির্যাতনের ওই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য।বিভিন্ন সময় এই চক্রের সদস্যরা বেশ কয়েকজন নারীকে পাচার করেছে।হৃদয় বাবুসহ চক্রের সবার বয়স ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ও ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু অপরাধী মিলে সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রটি গড়ে তুলেছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া বখে যাওয়া তরুণী থেকে গৃহিনী পর্যন্ত সবাই এ চক্রের টার্গেট বলে জানান ডিসি মো. শহিদুল্লাহ।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ঘটনায় জড়িত সব বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জেনেছে। টিকটক হৃদয়সহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের সহায়তায় অবৈধভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। মূলত টিকটক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে তরুণ-তরুণীরা একটি ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হয়। গ্রুপটির মূল পৃষ্টপোষক মূলত আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রটি। এই গ্রুপের অ্যাডমিনের তত্ত্বাবধানে গত বছরের শেষের দিকে ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি জেলার একটি রিসোর্টে ৭শ থেকে ৮শ তরুণ-তরুণী পুল পার্টিতে অংশ নেয়। ওই পার্টির অন্যতম সমন্বয়কারী ছিল টিকটক হৃদয় বাবু।

মো. শহিদুল্লাহ বলেন, এই গ্রুপে সুনির্দিষ্ট কিছু সদস্য আছে, যারা গ্রুপের নারী সদস্যদের ভারতের বিভিন্ন মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে পাচার করে। ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায় এই চক্রের মূল আস্তানা। মূলত যৌনবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে ভারতে পাচার করা হয়। চক্রটি ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু হোটেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। যে হোটেলগুলোতে চাহিদামাফিক বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে পাঠানোর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

তরুণীকে নির্যাতনের এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা ডিএমপির হাতিরঝিল থানায় মানব পাচারকারী আইন ও পর্নোগ্রাফি অ্যাক্টে একটি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রেফতার  করা ব্যক্তিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। গত কয়েক দিন ধরে ভারতের কর্নাটক রাজ্যে বাংলাদেশি ওই তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল ভিডিওটি ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগেরও নজরে আসে বলেও জানান ডিসি শহিদুল্লাহ।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ভিডিওতে দেখা যায়, আনুমানিক ২০ থেকে ২২ বছর বয়সী এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে তিন-চারজন যুবক অমানুষিকভাবে যৌন নির্যাতন করছে। ধারণ করা ভিডিওটির একজন নির্যাতনকারীর সঙ্গে রাজধানীর মগবাজার এলাকার একটি ছেলের ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ছবির সঙ্গে মিলে যায়। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের তদন্তে দেখা যায়, যুবকের নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয়। হৃদয়ের পরিচয় তার মা ও মামার কাছ থেকেও শনাক্ত করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে ‘টিকটক হৃদয়’ নামে চেনে। এছাড়া তরুণীর বাবা-মাকে খুঁজে বের করেছে পুলিশ। মেয়েটির বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তাদের মেয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় থাকত বলে জানান তিনি।

বিএনএনিউজ/আরকেসি

Loading


শিরোনাম বিএনএ