বিএনএ ডেস্ক : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. জুবায়েদ হোসাইনকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সময় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন তার ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৯)। হত্যায় অংশ নেয় বর্ষার প্রেমিক মো. মাহির রহমান (১৯) ও তার বন্ধু ফারদিন আহমেদ আয়লান।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের রৌশান ভিলায় ঘটনাটি ঘটেছে ।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মল্লিক আহসান সামী জানান, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা চলছিল। বর্ষা ও মাহির মিলে এই পরিকল্পনায় যুক্ত হয়। হত্যার দিন মাহির ও আয়লান দুইটি নতুন সুইচ গিয়ার ছুরি কিনে। বিকেলে রৌশান ভিলার নিচতলায় এসে মাহির ও আয়লান মিলে জুবায়েদের ওপর প্রথম হামলা চালায়।
আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় জুবায়েদ প্রাণ বাঁচাতে সিঁড়ি বেয়ে তিনতলার দিকে ওঠার চেষ্টা করেন। সিঁড়ির বিভিন্ন ধাপে রক্তের দাগ পাওয়া যায়। তিনতলায় উঠে পড়লেও তখন তিনি আর হাঁটতে পারেননি। ওই মুহূর্তে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বর্ষা। সিঁড়িতে দেখা হওয়ার সময় জুবায়েদ তাকে বলেন, আমাকে বাঁচাও। তখন বর্ষা জবাব দেন, ‘তোমাকে না মারলে আমি মাহিরের হবো না।’ এরপর মাহির আবার ছুরি নিয়ে এসে জুবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করে।
হত্যার পর মাহির দ্রুত পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় আয়লানকে বলে ছুরিটি তুলে আনতে। ঘটনার পরে মাহির তার বন্ধু প্রিতমের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।
পুলিশ জানায়, হত্যার সময় বর্ষা শুধু উপস্থিত ছিলেন না, পুরো পরিকল্পনাতেই সে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। জুবায়েদের সঙ্গে তার মাত্র তিন মাসের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সেই সময়েও বর্ষা মাহিরের প্রতি টান ছাড়তে পারেননি। বর্ষা নিজের গহনা বিক্রি করে মাহিরকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেন, যেটি দিয়ে মাহির একটি মোটরবাইক কেনে।
নিহত জুবায়েদ কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি গত এক বছর ধরে বর্ষাকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন।
ঘটনার পরদিন জুবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বংশাল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় বর্ষা, মাহির, আয়লানসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা তিনজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
বিএনএ/ ওজি
![]()
