29 C
আবহাওয়া
৪:১১ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ইবিতে ক্লাসরুম সংকট, দূর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

ইবিতে ক্লাসরুম সংকট, দূর্ভোগে শিক্ষার্থীরা


বিএনএ, ইবি : ক্লাসরুম সংকটে দূর্ভোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৭টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ৩ বিভাগের নেই কোনো স্থায়ী ক্লাসরুম। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে বিভাগগুলোর নিয়মিত শিক্ষাকার্যক্রম। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এতে প্রশাসনের নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠার ছয় বছর, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও সমাজ কল্যাণ বিভাগের পাঁচ বছর, চারুকলা বিভাগের তিন বছর এবং কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া জার্নালিজম, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠার দুই বছর পূর্ণ হলেও কমেনি ক্লাসরুমের সংকট।

এর মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ছয় ব্যাচের জন্য ২ টি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও সমাজ কল্যাণ বিভাগে পাঁচ ব্যাচের জন্য ১টি ক্লাসরুম বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া চারুকলা, কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া জার্নালিজম ও শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের জন্য স্থায়ী কোনো ক্লাসরুম বরাদ্দ হয়নি। চারুকলা বিভাগের ক্লাস টিএসসিসি এবং রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের অস্থায়ী দুটি কক্ষে, কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ আইআইইআর ভবনের অস্থায়ী একটি কক্ষে এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ক্লাস গনিত বিভাগ ও জিমনেসিয়ামের অস্থায়ী একটি কক্ষে নেয়া হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে রুটিন অনুসারে সময় মতো ক্লাস না হওয়ায় সিলেবাস শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া এক ব্যাচের ক্লাস শেষ হতে না হতেই অন্য ব্যাচের এর শিক্ষার্থীরা একই ক্লাসরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে। এতে মনোসংযোগে যেমন ব্যাঘাত ঘটে ক্লাস রুমে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তেমনি অস্বস্থি বোধ করেন দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরাও।

শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, একটি-দুটি ক্লাসরুমে ডিপার্টমেন্টের ৫/৬টি ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা চালানো খুবই কষ্ট সাধ্য। একারণে নিয়মিত ক্লাস এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বিঘ্ন হচ্ছে। এতে পিছিয়ে পড়ছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তির পর এ সংকট আরও প্রকট আকারে ধারণে করবে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, নানা সংকট আর সীমাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে বিভাগ গুলো। ক্লাসরুম সংকটের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সেমিনার, লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব সহ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সমস্যা গুলোর দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মুন বলেন, একটি ক্লাসরুমে ৫ ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা চলে। কোনো ব্যাচের পরীক্ষা চললে ক্লাস নেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এতে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম যেমন ব্যহত হচ্ছে তেমনি নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। ক্লাসরুম সংকট সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা আবশ্যক।

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুদীপ রায় বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট কোনো ক্লাসরুম না থাকায় অন্যান্য বিভাগের কক্ষে ক্লাস করতে হয়। সেসব কক্ষে ক্লাস কিংবা পরীক্ষা থাকলে আমাদের ক্লাস বাতিল করতে হয়। আমাদের বিভাগটি যেহেতু ব্যবহারিক ভিত্তিক ক্লাস ঠিকমত না করতে পারায় আমাদের শিক্ষাজীবনের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক এ.এইচ.এম নাহিদ বলেন, ক্লাসরুম সংকটের কারণে একই ক্লাসরুমে ৫ ব্যাচের ক্লাস পরীক্ষা চালাতে হচ্ছে। এ সংকটের কারণে অনেক সময় ক্লাস ক্যান্সেল করতে হয়। শিক্ষকরা ঠিকমত ক্লাস নিতে পারছেন না। আমি প্রশাসনের কাছে তিনবার চিঠি পাঠিয়েছি। জানানো হয়েছিলো যে ক্লাসরুম সংকটের কারণে বিভাগের একাডেমিক ও দাপ্তরিক দুই কাজেই ব্যহত হচ্ছে। একটা ক্লাসরুমে পাঁচটা ব্যাচ পড়ানো কোনো ভাবেই সম্ভব না। আমরা বারবার নক করার পরও এইসব বিষয়ে কোনো সাহায্য পাচ্ছি না।

সমাজকল্যাণ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সভাপতি শ্যাম সুন্দর সরকার বলেন, আমাদের একটা ক্লাসরুম আছে একটা। কোন পরীক্ষা থাকলে অন্যান্য ব্যাচের ক্লাস নেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পরে। এটা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সকলেই সমস্যায় পড়ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ চলছে। আশা করি ঈদুল আজহার বন্ধের পরে আমরা বিভাগগুলোকে ক্লাসরুম হস্তান্তরের চেষ্টা করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম বলেন, এসব সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা যায় না। এক-দুই বছরের মধ্যে অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে। আমাদের নতুন ভবন যেগুলো হচ্ছে তা থেকে ক্লাসরুম দিয়ে সংকট কমিয়ে আনতে হবে।

বিএনএ/ তারিক সাইমুম, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ