29 C
আবহাওয়া
১০:৫০ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৪, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » ভাড়াটিয়ার ছদ্মবেশে শিশু অপহরণ: কুমিল্লা থেকে উদ্ধার

ভাড়াটিয়ার ছদ্মবেশে শিশু অপহরণ: কুমিল্লা থেকে উদ্ধার

ভাড়াটিয়ার ছদ্মবেশে শিশু অপহরণ: কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করলো বাকলিয়া পুলিশ

বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন নতুনব্রিজ অন্ধকার কলোনিতে ব্যাংক এশিয়ার পাশের একটি ভাড়া বাসা থেকে অপহৃত ৪ বছর বয়সী শিশু মো. রোহানকে ১৫ দিন পর কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। এ ঘটনায় কুমিল্লার বাঙ্গুরা বাজার থানা এলাকা থেকে অপহরণকারী আলো আক্তার আঞ্জুমান ওরফে তানিয়া (২৮) নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত নারীকে আটক করে পুলিশ।

অভিযুক্ত আলো আক্তার আঞ্জুমান ওরফে তানিয়া কুমিল্লা জেলার বাঙ্গুরা বাজার থানার উত্তর পেইন্যা এলাকার মৃত মাতু মিয়ার মেয়ে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপি’র বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখার উদ্দিন।

ভিকটিমের মা তানিসা বেগম (২৬) বাকলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার নম্বর-১১। মামলায় তানিয়া ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তানিসা বেগম চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানার কাজেঙ্গা গ্রামের মৃত জাকির হোসেন পাটোয়ারীর মেয়ে, বর্তমানে তিনি নতুন ব্রিজ অন্ধকার কলোনির একটি বাসায় ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। ১৮ মার্চ তানিসার পূর্ব পরিচিত মাসুম বাবু নামের একজন জানান যে, আলো আক্তার তানিয়া নামে একজন নারী ভাড়া বাসার খোঁজ করছেন। তানিসা একা সন্তান নিয়ে বাসায় থাকায় সাবলেট হিসেবে বাসা ভাড়া দিতে রাজি হন। সেদিন রাতেই তানিয়া তানিসার বাসায় সাবলেট ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন এবং নিজেকে কর্ণফুলী থানার একটি গার্মেন্টস কর্মী বলে পরিচয় দেন। তানিয়া বাসায় ওঠার কয়েকদিন পর ২৩ মার্চ রাতে তানিসা ছেলে রোহানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন এবং পরদিন ২৪ মার্চ সকালে সেহেরি খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৮টার দিকে ঘুম ভাঙলে তিনি ছেলেকে ও তানিয়াকে বাসায় না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এসময় তানিয়া তার ব্যবহৃত বাটন ফোনটি বিছানায় ফেলে রেখে তানিসার স্মার্টফোন সহ বেরিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে প্রতিবেশী রেহেনা বেগম জানান, সকালে তিনি তানিয়াকে রোহানকে নিয়ে বাসা থেকে বের হতে দেখেছেন এবং ধারণা করেছিলেন, নাস্তা খাওয়াতে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও ফিরে না আসায় তানিসা একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন এবং ছেলেকে খুঁজতে থাকেন। ৬ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে তানিয়ার মোবাইল নম্বর থেকে তানিসার ফোনে কল আসে। তানিয়া ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং টাকা না দিলে শিশুর ক্ষতির হুমকি দেয়। মুক্তিপণের মাধ্যমে টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যেই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

সূত্র জানায়  মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাক্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. মোবারক হোসেন প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে নিশ্চিত হন যে, অপহরণকারী তানিয়া শিশুটিকে কুমিল্লা জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে লুকিয়ে রেখেছেন। পরে কৌশলে মুক্তিপণ দেওয়ার অভিনয় করে তানিসার কাছ থেকে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করা হয়, যা থেকে অপরাধীর অবস্থান শনাক্ত করেন তদন্তকারীরা। ওসি মো. ইফতেখার উদ্দিনের নেতৃত্বে ও ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হকের দিকনির্দেশনায় এসআই মোবারক হোসেন অভিযান পরিচালনা করেন। অবশেষে স্থানীয় লোকজন ও বাঙ্গুরা বাজার থানা পুলিশের সহযোগিতায় অপহৃত শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার এবং অভিযুক্ত তানিয়াকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় বাকলিয়া থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে ওসি মো. ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘মামলার পরপরই প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হয়। অক্ষত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপহরণকারী তানিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মূলত বিকাশ নম্বর থেকেই তাদের অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।’

বিএনএনিউজ/ আরএস/শাম্মী

Loading


শিরোনাম বিএনএ