27 C
আবহাওয়া
৫:১৮ অপরাহ্ণ - মে ৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » নতুন বছরে শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের

নতুন বছরে শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের

শেয়ারবাজার

বিএনএ, ঢাকা : নতুন বছর ২০২৪ সা‌লে দেশের শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশা করছে বিনিয়োগকারিরা।গত বছর ছিল শেয়ার বাজারে হতাশার বছর। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত মোট ৩৫৫টি কোম্পানির মধ্যে ২১৪টির শেয়ারদর ফ্লোরপ্রাইসে (সর্বনিম্ন দরে) আটকে আছে। অর্থাৎ, তালিকাভুক্ত কোম্পানির একটি বড় অংশই গত বছর বলতে গেলে লেনদেন হয়নি। এর মধ্যে অনেক ব্লুচিপ (ভালো) শেয়ারও রয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে মূল্যসূচকেও। ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই৩০ সূচক ২০২৩ সালের প্রথম কার্যদিবসে ছিল ২১৯৫.৩০ পয়েন্টে। আর বছরটির সর্বশেষ কার্যদিবসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০৯৩.৮৩ পয়েন্টে।

অর্থাৎ, সূচকটি ৪.৬২ শতাংশ কমেছে। এছাড়া, ২০২৩ সালের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬২০৬.৮১ পয়েন্টে। আর সর্বশেষ কার্যদিবসে তা সামান্য বেড়ে ৬২৪৬.৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত বছর (২০২৩) প্রধান সূচকটি বেড়ে সর্বোচ্চ ৬৩৬৭.৪২ পয়েন্টে ওঠে, যা আগের বছর (২০২২) ৭১০৫.৬৯ পয়েন্টে উঠেছিল। এই হিসাবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে সূচকটি ৭৩৮.২৭ পয়েন্ট কমেছে।

বিদায়ি বছরে দেশের শেয়ারবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) বড় ধরনের ধস নেমেছে। ২০২৩ সালে মাত্র দুটি কোম্পানি আইপিওতে শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করেছে, যা খুবই হতাশার। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন, নতুন ২০২৪ সাল কেমন যাবে? সব ধরনের অনিশ্চয়তা কেটে কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে দেশের শেয়ারবাজার?

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে একটি বড় বাধা ফ্লোরপ্রাইস। যে কারণে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। কারণ, তালিকাভুক্ত কোম্পানির বেশির ভাগেরই শেয়ারদর ফ্লোরপ্রাইসে আটকে আছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজারের মোট ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের বাজারমূল্য ১ লাখ ৭২ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩০ কোটি টাকাই ফ্লোরপ্রাইসে আটকে আছে, যা মোট বাজারমূল্যের ৭৯ শতাংশ। অর্থাৎ, ব্যক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চাইলেও টাকার অঙ্কে তাদের মোট বিনিয়োগের ৭৯ শতাংশ শেয়ার কেনাবেচা করতে পারছেন না।

ডিএসই তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে মোট ২৪৪ কার্যদিবসে ডিএসইতে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০২২ সালে ২৪৪ কার্যদিবসে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দৈনিক গড়ে ৯৫৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। এ হিসাবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৩৭৮ কোটি টাকা বা প্রায় ৪০ শতাংশ কম লেনদেন হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, যেহেতু ফ্লোরপ্রাইসের কারণে অধিকাংশ শেয়ারের দর এক জায়গায় আটকে ছিল, আবার ফ্লোরপ্রাইস উঠে গেলে শেয়ারের দর আরও কমে যেতে পারে—এই অনিশ্চয়তায় নতুন বিনিয়োগ আসেনি। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে গতি ফেরাতে ফ্লোরপ্রাইস ওঠাতে হবে—এটা যেমন ঠিক, তেমনি এটা এমন প্রক্রিয়ায় ওঠাতে হবে, তা যেন বাজারে নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) তা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।

গত বছর আইপিও বাজারেও খরা ছিল। ২০২৩ সালে মাত্র দুটি কোম্পানি আইপিওতে শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে মাত্র ৮১ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। এর আগে এক বছরে এত কম আইপিও আর নিকট অতীতে দেখা যায়নি। এর আগের বছর ২০২২ সালে ছয়টি প্রতিষ্ঠান আইপিওর মধ্যে পুঁজিবাজার থেকে ৬২৬ কোটি ২৬ লাখ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করে। ২০২১ সালে ১৪টি কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে ১ হাজার ২৩৩ কোটি ২৬ লাখ ৯ হাজার টাকা উত্তোলন করে। এর আগে ২০২০ সালে আইপিওর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজার থেকে রেকর্ড পরিমাণ ১ হাজার ২৯৬ কোটি ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উত্তোলন করে। অর্থাৎ, কয়েক বছরের ব্যবধানে আইপিও বাজারে রীতিমতো ধস নেমেছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সূত্র বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এ কারণে অনেক কোম্পানি যারা পুঁজিবাজারে আসতে চাইলেও এখনো আইপিওর জন্য আবেদন করেনি। এজন্য আইপিওর সংখ্যা কম। আর্থিক অবস্থা একটু ঘুরে দাঁড়ালেই অনেক কোম্পানি আইপিওর জন্য আবেদন করবে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজার গতিশীল করতে ভালো আইপিও আনার বিকল্প নেই। বহুজাতিক ভালো কোম্পানিগুলো দেশের পুঁজিবাজারে আসছে না। এমনকি বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও সরকারি অনেক কোম্পানিও পুঁজিবাজারমুখী হচ্ছে না। এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জোর দিতে হবে। কেন এসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসছে না, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।নূর মোহাম্মদ, এস‌জিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ