বিএনএ, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহতাব উদ্দিনকে সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। তবে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে সরে যায় হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
অভিযুক্তরা হলেন, শহীদ শামসুজ্জোহা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহরিয়ার সৌরভ। তারা এক ছাত্রলীগ কর্মীকে অবৈধভাবে ওই সিটে তুলেছেন।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. মাহতাব উদ্দিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের এবং শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ৩২৬ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ শামসুজ্জোহা হলের মেঘনা ব্লকের ৩২৬ নম্বর রুমটি বর্তমানে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন হল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহরিয়ার সৌরভ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহতাবের বেডপত্র বাইরে বের করে দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা। যাওয়ার জায়গা না পেয়ে রুমের সামনে বারান্দায় বেডপত্র নিয়ে অবস্থান করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. মাহতাব উদ্দিন বলেন, “আমি ৩২৬ নাম্বার রুমে পুনঃবরাদ্দ পাই। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে শহীদ শামসুজ্জোহা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম দলবল দিয়ে জোরপূর্বকভাবে আমাকে টেনে হিচড়ে রুম থেকে বের করে দেয় ও আমার কিছু মালামাল অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। তারা আমাকে হুমকি দিয়েছে যেন আমি আমার বরাদ্দকৃত ৩২৬ নম্বর রুম থেকে চলে যাই। কিন্তু আমি এখন কোথায় যাবো। ফলে আমি রুমের সামনেই অবস্থান করছি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যখন-তখন আমাকে আক্রমণ করতে পারে; ফলে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম বলেন, “আমাদের হল প্রভোস্ট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ করে থাকে। ছাত্রলীগ করে এমন কথা শুনলে তিনি কাউকে বরাদ্দ দিতে চায় না। ৩২৬ নম্বর সিটে আমাদের এক ছাত্রলীগ কর্মী তিনদিন ধরে অবস্থান করছিল, কিন্তু ওই ছেলে ছাত্রলীগ করে বলে তার বরাদ্দ বাতিল করে ওই সিটে মাহতাব নামের এক শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ দেয় হল প্রভোস্ট। ফলে আমাদের কর্মীকে তুলতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
সার্বিক বিষয়ে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. একরামুল ইসলাম বলেন, “কিছুদিন আগে হলের কিছু আসন খালি থাকা সাপেক্ষে আবাসিকতার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। সিনিয়র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের এক কক্ষবিশিষ্ট আসনে স্থানান্তর করা হয়েছে। মাহতাবকে ১৫৪ নম্বর কক্ষের পরিবর্তে ৩২৬ নম্বর কক্ষে পুনরায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। গতকাল থেকে মাহতাব ওই কক্ষে ছিলেন। তবে ছাত্রলীগের নেতারা তাকে নামিয়ে দিয়েছে বলে শুনেছি। যেহেতু কক্ষটা মাহতাবকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মাহতাবই ওই কক্ষে থাকবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে মাহতাবকে ওই আসনে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।”
এদিকে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে এই ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হয়ে হলের মেঘনা ব্লকের ৩২৬ নম্বর রুমে অবস্থান করা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তখন সেখান থেকে সরে যায়। অবৈধভাবে রুমে অবস্থান করা হল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহরিয়ার সৌরভও অবস্থা বেগতিক দেখে কেটে পড়েন। পরবর্তীতে হল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নিজের বরাদ্দকৃত আসন বুঝে পান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. মাহতাব উদ্দিন।
বিএনএ/সাকিব, এমএফ