বিএনএ ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনিচক্রের মূল শক্তি জিয়াউর রহমান ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুনিচক্রের সদস্যরা এখনো একাত্তরের পরাজিত শক্তির কাছ থেকে সহযোগিতা পায়-জানিয়ে তিনি বলেন তাদের ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে।
শোকের মাসের শেষ দিনে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মরণে ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তেব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
সে সময় তিনি আরও বলেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করেই থেমে থাকেনি। তারা বঙ্গবন্ধুর নাম নিষিদ্ধ করেছিল। ইতিহাস বিকৃতিও করেছিল। এই খুনি চক্রের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কিছু বেঈমান মোনাফেক যুক্ত ছিল । এখনও যুদ্ধাপরাধী, পরাজিত শক্তি এবং ১৫ আগস্টের খুনী, ফাঁসি যাদের হয়েছে তাদের ছেলে, যুদ্ধাপরাধীদের দোসর এবং বংশধর তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। যে আন্তর্জাতিক শক্তি মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছিল তাদের কিছু কিছু এদের মদদ দিয়ে থাকে। কাজেই এ ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদ মোশাররফ আহত হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার হয়েছিল জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জিয়াউর রহমানের গুলি চালানোর কোনো প্রমাণ নেই।
‘ছাত্রলীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পরবর্তী প্রতিটি সরকার, বিশেষ করে জিয়াউর রহমান ছাত্রসমাজকে বিপথে ঠেলে দিয়েছে দেশে । দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের অতীত গৌরবের কথা মনে রাখতে হবে। আদর্শ না থাকলে সেই নেতৃত্ব দেশকে কিছু দিতে পারে না। নীতি আদর্শ নিয়ে চলতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্রদের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জন সেই মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বা যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সবসময় ছাত্ররাই করেছে। তারাই সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে।
তিনি বলেন, চলার পথ মসৃণ নয়। পায়ে পায়ে শত্রু আছে। পদে পদে বাঁধা আছে। বাধাবিঘ্ন আসতেই থাকবে। একথা স্মরণ রেখেই চলতে হবে। কিন্তু সৎ পথে থাকলে এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং আদর্শ নিয়ে যদি চলা যায় তাহলে যে কোন কঠিন পথ পাড়ি দিয়েও অবশ্যই সাফল্য অর্জন করা যায়। তবে, এটাও ঠিক সত্যের পথ সবসময় কঠিন হয়। আর সেই কঠিন পথকে যারা ভালবেসে গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে পারে তারাই সাফল্য আনতে পারে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন তাঁর মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। জীবনে কখনো মাথা নিচু করেননি তিনি। জাতির পিতার জীবনসঙ্গী অন্তিমযাত্রায়ও বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন বলে জানান শেখ হাসিনা।
আরোচনা সভায় জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান এমপি।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের বাৎসরিক প্রকাশনা ‘জন্মভূমি’ এবং ‘জয় বাংলা- ম্যাগাজিনের (২য় সংস্করণ) মোড়ক উন্মোচন করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
বিএনএনিউজ/আরকেসি