বিএনএ ডেস্ক: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে হাওয়া সিনেমার পরিচালকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সিনেমা দর্শকদের হলে ফিরিয়ে এনেছে। সেই সিনেমাগুলোর একটি ‘হাওয়া’।
তথ্যমন্ত্রী জানান, তিনি বিদেশে ছিলেন। এ ঘটনা জানার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে সেই মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যে কর্মকর্তা মামলা করেছে তাকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়েছে। আইনের যদি ব্যত্যয় হয়ে থাকে তাহলে পরিচালককে নোটিশ করতে পারতো। সরাসরি কোর্টে গিয়ে মামলা করা সমীচীন হয়নি বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী।
‘শনিবারের বিকেল’ সিনেমার
এদিকে আরেক সিনেমা ‘শনিবারের বিকেল’ নিয়েও কথা বলেছেন তথ্য মন্ত্রী। তিনি বলেন, ঢাকায় হলি আর্টিজানে যে হামলা হয়েছিলো সেই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে এই সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে দু’জন পুলিশ অফিসার মারা গেছেন এবং আমাদের পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে জঙ্গিদের দমন করেছিল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেন্সর বোর্ডের অভিমত, সেই বিষয়গুলো সিনেমাটিতে আসেনি। সেজন্য এই দৃশ্যগুলো সংযোজন করতে বলা হয়েছে। সেটি তারা কিছুটা করেছে বলে আমাকে জানিয়েছে কিন্তু সেটিও যথেষ্ট নয়। তারা আপিল করেছিল। আপিল কর্তৃপক্ষ সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজককে জানিয়ে দেবে কী কী সংযোজন করা প্রয়োজন। সেগুলো সংযোজন হলে আমি মনে করি এই সিনেমা রিলিজ করার ক্ষেত্রে যে সমস্যা আছে সেটি কেটে যাবে।
ওটিটি নীতিমালা
ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, ওটিটি একটি ক্রমবর্ধমান আধুনিক প্লাটফর্ম এবং বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা। আমরা এটিকে প্রমোট করতে চাই। ওটিটি প্লাটফর্ম এত বিস্তৃত, এত ব্যাপকভাবে ক্রমবর্ধমান যে এটিকে সেন্সর করা সম্ভব নয়। সেজন্য এটি একটি নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
হাছান মাহমুদ জানান, যারা ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করে তাদেরকে দিয়েই মন্ত্রণালয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছে, সেই কমিটি কাজ করছে এবং সেই কমিটি সমস্ত অংশীজনদের সাথে আলাপ করে তারা এই নীতিমালা চূড়ান্ত করবে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমরা এমন একটি নীতিমালা করতে চাই, যে নীতিমালা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং একইসাথে আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করবে।
সিনেমায় অনুদান ও হল সংস্কার
অনুদান নিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সিনেমা শিল্প নানা সংকটের মধ্য দিয়ে এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে। আমরা বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদান দিয়েছি কারণ সিনেমা বানিয়ে আসলে পয়সা উঠতো না, এখন উঠবে। এখন আবার দর্শক ফিরে আসছে, সিনেমা হল বাড়ছে। আস্তে আস্তে পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে। একইসাথে আর্টফিল্মে অনুদান দেয়া প্রয়োজন। আর্টফিল্ম ব্যবসা করতে পারে না কিন্তু আর্টফিল্মের প্রয়োজন আছে।
সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে সরকারের হাজার কোটি টাকা ঋণ তহবিলের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র ইতোমধ্যেই বিশ্ব অঙ্গনে কিছুটা জায়গা করে নিয়েছে। আমাদের অনেক ছবি এখন আমেরিকা, ইউরোপে চলে।
সংস্কৃতিসেবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং দেশকে অপসংস্কৃতি, তরুণদের বিপথগামিতা, জঙ্গিবাদ, মাদকাসক্তি থেকে রক্ষার জন্য আসলে দেশে একটি সংস্কৃতি সুনামি দরকার বলে আমি মনে করি। সেটি যদি আমরা করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের তরুণকে, নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারবো।
বিএনএ/এ আর