স্বাস্থ্য ডেস্ক: দেশে মোট মৃত্যুর ৭০ শতাংশ অসংক্রামক রোগে। ২০৪০ সালে এই হার ৮০ শতাংশে উঠে যেতে পারে। দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। আর সরকারি হাসপাতালে যত রোগীর মৃত্যু হয় তার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী। বাংলাদেশে প্রতি হাজারে ১১ দশমিক ৪ জন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে স্ট্রোকের চিকিৎসাব্যবস্থা পুরোটাই রাজধানীকেন্দ্রিক। এ কারণে ঢাকার মানুষ চিকিৎসকের কাছে যত দ্রুত পৌঁছাতে পারে, গ্রামের মানুষের পক্ষে তা সম্ভব হয় না।
এই অবস্থায় আজ শনিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্য নিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্ট্রোকের লক্ষণ জানুন, মিনিটেই বাঁচিয়ে দিন বহু জীবন’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে হৃদ্রোগের পরেই স্ট্রোকের স্থান। এ ছাড়া পঙ্গুত্ব বা শারীরিক অক্ষমতার জন্য স্ট্রোককে বেশি দায়ী করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্ট্রোকের মূল কারণ উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৪ গুণ বেড়ে যায়। রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২০ অনুযায়ী, মৃত্যুর শীর্ষ কারণগুলোর মধ্যে স্ট্রোক দ্বিতীয়। দেশে বছরে ১৮ লাখের বেশি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। প্রতি ৪ জনের ১ জন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছেন। চল্লিশোর্ধ্বদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তবে শিশুদেরও স্ট্রোক হতে পারে।
আইসিডিডিআরবি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের যৌথ সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশের প্রবীণ ব্যক্তিদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ব্যাপকতা: জাতীয় সমীক্ষার’ ফলাফলে জানা যায়, ২০২০ সালে বাংলাদেশে মোট ডিমেনশিয়া (স্মৃতিভ্রংশ) রোগীর সংখ্যা ছিল ১১ লাখ। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার পুরুষ। বাকিরা নারী। এই ডিমেনশিয়ার অন্যতম কারণ স্ট্রোক।
আইসিডিডিআর,বির ইনিশিয়েটিভ ফর নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেস সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল এলাকায় জরিপকালে দেখা গেছে, প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত ছিলেন, যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং তাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি। দেশজুড়ে ষাটোর্ধ্ব মানুষ নিয়ে করা এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ১০ জনে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত। যাদের স্ট্রোক হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই বিকলাঙ্গ হয়ে যাচ্ছেন, এমনকি মৃত্যুও ঘটছে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রামে শনিবার বেলা সোয়া ১১ টায় এভার কেয়ার হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারে উপস্থিত থাকবেন এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর মহাব্যবস্থাপক ডা. ফজলে আকবর, হাসপাতালেল নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কন্সালটেন্ট ডা. হামিদুল হক, ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, নিউরোসার্জারি বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খান ও সহযোগী কন্সালটেন্ট ডা. এ. এম. সাফায়েত হোসেন প্রমুখ।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ