বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদী পারাপারে ফেরিতে জনপ্রতি ৫ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ যাত্রীদের ক্ষোভ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৫ টাকা ভাড়া আদায় বন্ধ করে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে এ ভাড়া আদায় বন্ধ করা হয়। শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ টোল আদায় শুরু করে ফেরির ইজারাদার কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকালে দেখা গেছে, নগর অংশে ফেরির ইজারাদারের নিয়োজিত একজন কর্মী মাইকিং করছেন, ফেরিতে উঠলে জনপ্রতি মানুষের পাঁচ টাকা করে ভাড়া।
সওজ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১ আগস্ট সংস্কার কাজের জন্য কালুরঘাট সেতু বন্ধ ঘোষণা করলে যানবাহন পারাপারে কালুরঘাটে ফেরি চালু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। ফেরি চালুর পর টোল নির্ধারণ করে ফেরিঘাট ইজারা দেয় সওজ। এতদিন যানবাহন পারাপারে টোল আদায় করা হলেও মানুষ পারাপারে টাকা নেওয়া হতো না। কিন্তু শুক্রবার (২৮ জুন) থেকে মানুষ পারাপারে টোল আদায়ের নতুন নিয়ম চালু করা হলে উষ্মা প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনা করছেন বোয়ালখালীর বাসিন্দারা। বিভিন্ন সংগঠন এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায়। ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের টোল ও এক্সেল শাখার উপসচিব ফাহমিদা হক খান রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগাধীন কালুরঘাট ব্রিজের নদীর পশ্চিম প্রান্ত (মোহরা অংশ) থেকে পূর্ব প্রান্ত (বোয়ালখালী অংশ) পর্যন্ত ফেরিঘাট পারাপারকারী যানবাহন থেকে টোল আদায়ের নিমিত্তে টোল নীতিমালা, ২০১৪ অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণির যানবাহন চলাচলের জন্য টোল নির্ধারণ করা হয়। এতে ট্রেইলার ৫৬৫ টাকা, হেভি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান ৪৫০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক (২ এক্সেল বিশিষ্ট) ২২৫ টাকা, বড় বাস (চালক ব্যতীত ৩১ অথবা তদুর্ধ্ব আসন) ২০৫ টাকা, মিনি ট্রাক ১৭০ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যান (পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর) ১৩৫ টাকা, মিনিবাস/কোষ্টার (৩০ জন যাত্রী বহনের উপযোগী) ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস (৮ থেকে ১৫ জন যাত্রী) ৯০ টাকা, ফোর হুইল চালিত যানবাহন (পিক-আপ, কনভারশনকৃত জিপ, রেকার) ৯০ টাকা, সিডান কার ৫৫ টাকা, অটো টেম্পু, সিএনজি অটোরিক্সা, অটোভ্যান, ব্যাটারিচালিত ৩/৪ চাকার মোটরাইজড যান ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০টাকা, রিক্সাভ্যান/রিক্সা/বাই সাইকেল/ঠেলা গাগি ৫ টাকা হারে টোল নির্ধারণ করা হয়। এতে জনপ্রতি টোল আদায়ের বিষয়ে বলা হয়নি। অথচ ইজারাদার কর্তৃপক্ষ জনপ্রতি টোল আদায় করছে।
চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, জনপ্রতি টোল আদায়ের অভিযোগ পেয়েছি। তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইজারাদার যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অন্যায়। ফেরির ইজারাদার কর্তৃপক্ষের না পোষালে লিখিতভাবে সওজকে জানাতে পারেন। শুধুমাত্র যানবাহন থেকে টোল আদায়ের নির্দেশনা রয়েছে।
বিএনএনিউজ/ বাবর মুনাফ