বিএনএ, ময়মনসিংহ : মানিকগঞ্জ থেকে দেহ এবং টাঙ্গাইল থেকে মাথা উদ্ধারের ঘটনায় ১৭ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল কুদ্দুসকে (৪১) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪। গ্রেফতারকৃত আব্দুল কুদ্দুস টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার ভাবনাপাড়া গ্রামের শামসুল হক বেপারীর ছেলে।
রোববার (২৯ জানুয়ারী) দুপুরে নগরীর আকুয়া বাইপাস র্যাব-১৪ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব’র অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম খান। এর আগে শনিবার (২৮ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলার বহেরার চালা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, ২০০৬ সালের মে মাসে মানিকগঞ্জ জেলার সাঁটুরিয়ার বেতুলিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামকে (৩৪) হত্যা করে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দেহ এবং টাঙ্গাইলের নাগরপুরে খন্ডিত মস্তক ফেলে পালিয়ে যায় আসামীরা। এঘটনায় ওই মাসের ২১ তারিখে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার এসআই আব্দুল জলিল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে আসামী পলাতক ছিলেন। ওই মামলায় তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ৭ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এই মামলায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামী আব্দুল কুদ্দুসকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করলে র্যাব অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও বলেন, ভিকটিম শহিদুল ইসলাম ২০০৪ সালে ধামরাই উপজেলার গোয়াড়ীপাড়ায় একটি অফিস ভাড়া নিয়ে বাংলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামক একটি সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সঞ্চয়, ঋণদান এবং ফিক্সড ডিপোজিট কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল সে। প্রতিষ্ঠানে লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছিলো এবং একসময় তাদের একাউন্টে সদস্যদের সঞ্চয়ের বেশ কিছু টাকা জমা হয়। সেই টাকা ও প্রতিষ্ঠানটির লোভে আসামিরা শহিদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী আব্দুল কুদ্দুসসহ অন্য আসামীরা শহিদুল ইসলামের সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরী করে। বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে তাকে পাত্রী দেখানোর কথা বলে মানিকগঞ্জে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে রাজা মিয়া, সাহেদ, কুদ্দুস, বিষ্ণু সুইপার রঁশি দিয়ে গলা পেঁচিয়ে, রুমাল দিয়ে মুখ চেপে ধরে ভিকটিম শহিদুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর শহিদুলের গলা কেটে মানিকগঞ্জে ও মাথা টাঙ্গাইলে নিয়ে ফেলে দেয়।
তিনি বলেন, এরপর থেকে আসামী আব্দুল কুদ্দুস পলিয়ে ছিলেন। পালিয়ে থাকা অবস্থায় নিজের মামাত ভাই’র নাম, তার বাবার নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে নিজের আইডি কার্ড তৈরী করে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। আসামীকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান তিনি।
বিএনএ/ হামিমুর রহমান, ওজি