বিএনএ, সাভার: সাভারের আশুলিয়ায় পার্লারের আড়ালে দেহ ব্যবসা ও মানব পাচারের মতো জঘন্য অপরাধে দুই নারী সহযোগীসহ তিন জনকে আটক করেছে র্যাব-৪। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।
এরআগে গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন- আশুলিয়া থানার পাড়াগ্রাম এলাকার শাহীন খান (২৮), সেলিনা আক্তার (৩৫) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৩২)। প্রত্যেকেই ঢাকা জেলার বাসিন্দা।
র্যাব জানায়, করেকজন ভুক্তভোগী অধিনায়ক র্যাব-৪ বরাবর শাহীন খানের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফিসহ একাধিক বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে বিষয়টি আমলে নিয়ে র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধানে এর সত্যতা পায়। শাহীন সুদর্শন হওয়ায় অল্প বয়সেই চারিত্রিক ও নৈতিক অধঃপতনে চলে যায়। মায়ের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অষ্টম শ্রেণীর পর তাকে আর বিদ্যালয়ে পাঠানো যায়নি। এলাকায় উঠতি বয়সী মেয়েদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করা তার একটি নেশায় পরিণত হয়। মাত্র ২৮ বছর বয়সে তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৫টি বিয়ে করে। এবং শতাধিক নারীর সাথে শাহিন খানের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়। তার এই অসামাজিক ও অনৈতিক কাজের জন্য তার তৃতীয় স্ত্রী এবং মা তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।
র্যাব আরও জানায়, আটককৃত শাহীন ও সেলিনা আক্তার মাদক ব্যবসাসহ দেহ ব্যবসায় নিজেদেরকে সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করে। সেলিনা আক্তার একটি পার্লার ব্যবসার নামে নারীদেরকে নিয়ে অবৈধভাবে দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত করত। পার্লারে মেয়েদের কাজ শেখানোর নাম করে নিয়ে এসে জোড় করে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে বিপদগ্রস্থ করত। আটককৃত অপর আসামি জান্নাতুল ফেরদৌস তার সাভার ব্যাংক কলোনীর বাসায় আটককৃত শাহীন ও সেলিনা আক্তারের সাথে মিলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দেহ ব্যবসার স্থান রূপে ব্যাবহার করে আসছিল।
এবিষয়ে সিপিসি-২ র্যাব-৪ এর কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার (বিএন) রাকিব মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আটককৃত শাহীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবিবাহিত ও বিপত্নীক হিসেবে পরিচয় ও ভুয়া ঠিকানা দিয়ে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে শারীরিকভাবে মিলিত হতো। শাহিন খান বিভিন্ন সময়ে নিজের বিভিন্ন ভুয়া পরিচয় প্রদান করে। কখনো শাহিন ইসলাম জীবন, কখনো শাহিন খান, কখনো মো. শাহিন ইসলাম নামে নিজের পরিচয় দেয়। এছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শাহিন এন্টারপ্রাইজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচয় দিত। অষ্টম শ্রেণী পাস হলেও উচ্চশিক্ষিত বলে প্রচার করত মুখোশধারী শাহীন। কৌশলে ট্রাপে ফেলে বিশেষত নারীদের সাথে অনৈতিকভাবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ভিডিও ধারণ করে তার মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করত। শাহিনের ব্যক্তিগত মোবাইলে এর বহু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়।
আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মানব পাচার, পর্নোগ্রাফি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন। ভবিষ্যতে এরূপ জঘন্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
বিএনএ/ইমরান, এমএফ