বিএনএ ডেস্ক: কিশোরগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে কিশোরগঞ্জে বাবা-ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। কুড়িগ্রামে মারা গেছেন মামা-ভাগ্নে ।শুক্রবার(২৮ মে) সকাল থেকে নিয়ে বিকেল পর্যন্ত পৃথক তিনটি দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুবকর সিদ্দিক জানান, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াল ইউনিয়নের জালিয়াপাড়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে বাবা-ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন।শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- জালিয়াপাড়ার হারুন অর রশিদ (৪৫) ও তার ছেলে বাবলু (১৮) এবং হারুন অর রশিদের ভাতিজা বুরহান উদ্দিনের ছেলে শাদ (১০)।
কর্শাকড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বদর উদ্দিন জানান, বিদ্যুৎ লাইন থেকে একটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে। ওই বাঁশের খুঁটিতে শাদ তার বাইসাইকেলটি রাখে। দুপুর আড়াইটার দিকে শাদ বাইসাইকেল আনতে গেলে প্রথমে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়। পরে বাবলু ও হারুন অর রশিদ তাকে বাঁচাতে গেলে তিনজনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, জেলার ভৈরবে গাছ থেকে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মো. সজিব (২৭) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।শুক্রবার ভোরে ভৈরবের বঙ্গবন্ধু সরণি এলাকার মুজিবর রি-রোলিং কারখানা সংলগ্ন স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার নোয়াপাড়া গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন মিল শ্রমিক জানা গেছে।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
অন্যদিকে, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের নগরপাড়া গ্রামে শুক্রবার দুপুরে বৈদ্যুতিক মেরামতের কাজ করতে গিয়ে তৈয়ব আলী (৪৫) ও হাকিম উদ্দিন (৫৫) নামে দুই ব্যক্তি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তৈয়ব আলীর স্ত্রী জামেনা বেগম (৪০)। নিহত দুজন আপন মামা ও ভাগ্নে।
নিহত তৈয়ব আলী ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে এবং হাকিম উদ্দিন মৃত ইসলামের ছেলে। তারা দুজনেই পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন। গুরুতর আহত জামেনা বেগম আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
থেরাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, শুক্রবার দুপুরে বিদ্যুৎতের সরবরাহ লাইন বন্ধ থাকার সুবাদে মামা তৈয়ব আলী ও ভাগ্নে হাকিম উদ্দিন তৈয়ব আলীর বাড়িতে অবস্থিত বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ লাইনে মেরামত কাজ করছিলেন। সে সময় হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে এলে দুজনেই বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে পড়ে। তাদেরকে বাঁচাতে তৈয়ব আলীর স্ত্রী জামেনা বেগম এগিয়ে এলে তিনিও বিদ্যুৎতায়িত হন। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে তৈয়ব আলী ও হাকিম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি