23 C
আবহাওয়া
৯:৪০ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ১৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » নতুন নগর গড়‌তে সক‌লের সহ‌যো‌গিতা চাই: রেজাউল

নতুন নগর গড়‌তে সক‌লের সহ‌যো‌গিতা চাই: রেজাউল

নতুন নগর গড়‌তে সক‌লের সহ‌যো‌গিতা চাই: রেজাউল

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগরীর নানা সমস‌্যা সমাধা‌নে সম‌ম্বিত প্রয়া‌সে জলাবদ্ধতামুক্ত, যানজটমুক্ত, মাদক-সন্ত্রাস ও জুয়ামুক্ত, নিরাপদ, প‌রিচ্ছন্ন, প‌রি‌বেশবান্ধব, প‌রিক‌ল্পিত, সমৃদ্ধ, পর্যটন রাজধানী হি‌সে‌বে গ‌ড়ে তুল‌তে সর্বমহ‌লের সহ‌যো‌গিতা কামনা ক‌রেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নব নির্বা‌চিত মেয়র মো. রেজাউল ক‌রিম চৌধুরী।  তিনি নির্বাচনী অঙ্গীকার শতভাগ পূরণ করার চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে নিজ বাসভব‌নের‌ সাম‌নে মহানগর আওয়ামী লী‌গের প্রধান নির্বাচনী কার্যাল‌য়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এই চট্টগ্রামকে আমি পরিকল্পিতভাবে সাজাতে চাই। এজন্য সবার সঙ্গে পরামর্শ করে এবং তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পর্যালোচনা করে যেটা বাস্তবসম্মত হবে সেটাই গ্রহণ করবো। বিভিন্ন এলাকায় অনেক সমস্যা আছে। ওয়ার্ডগুলোতে-মহল্লায় অনেক দরিদ্র মানুষ বসবাস করে। একজন রিকশা চালকেরও মেধা আছে, বুদ্ধি আছে। আর্থিক সমস্যার কারণে সে হয়তো উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেনি। তার বুদ্ধিও অনেক সময় কাজে লাগতে পারে।

তিনি বলেন, আমি এলাকার সব মানুষকে ডাকবো। মহল্লা সর্দার থেকে আরম্ভ করে এলাকার গণ্যমান্য লোক-সবার পরামর্শ নেবো। আপনার এলাকার কি সমস্যা আছে-সেটা আপনিই চিহ্নিত করতে পারেন। বাইরের কেউ এসে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। তাই এলাকার মানুষই এলাকার সমস্যাগুলো দেখিয়ে দেবে। তারপর এসব সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায়, তাদের পরামর্শ নিয়ে এবং যে পরামর্শ গ্রহণযোগ্য হবে, যে পরামর্শ ওই এলাকা পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার জন্য প্রযোজ্য হবে-সেটাই গ্রহণ করবো ও বাস্তবায়ন করবো। তখন কেউ আর এককভাবে মেয়রকে দোষারোপ করতে পারবে না। তখন আমি বলবো-আপনাদের সবার সাথেই তো পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন মেয়রকে দোষ দেওয়ার কোনও অবকাশ আপনাদের নাই।

রেজাউল বলেন, কোনো প্রভাব, প্রতিপত্তি, লোভ, লালসা অতীতে যেমন আমাকে নীতি ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি, ভবিষ্যতে মেয়রের চেয়ারে বসার পরও আমাকে কেউ এক ইঞ্চিও বিচ্যুত করাতে পারবে না।

তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন থাকে। স্বপ্ন না থাকলে কেউ এগুতে পারে না। আমারও স্বপ্ন ছিল, এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করা, মানুষের স্বার্থে নিজেকে বিলিয়ে দেয়া। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন, এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আল্লাহ আমাকে মহান দায়িত্ব দিয়েছেন। এই দায়িত্ব যেন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করতে পারি, সেজন্য দোয়া চাই।

পারিবারিকভাবে যা সম্পদ আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, চট্টগ্রামকে আমি পরিকল্পিতভাবে সাজাতে চাই। তবে এককভাবে নয়, সবাইকে নিয়ে। এককভাবে করলে ভুলত্রুটি থেকে যায়। চট্টগ্রামে অনেক জ্ঞানী-গুণি মানুষ আছেন, সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, পরিকল্পনাবিদ আছেন। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে সাথে নিয়ে, তাদের পরামর্শ নিয়ে, যে পরামর্শ টেকসই হবে, বাস্তবসম্মত হবে সেটাকে গ্রহণ করে চট্টগ্রামকে সাজাতে চাই।

নেতাকর্মী‌দের উ‌দ্দে‌শ্যে তি‌নি ব‌লেন, বিশাল জন‌গোষ্ঠী নি‌য়ে বিস্তীর্ণ চট্টগ্রাম মহানগ‌রে সি‌টি করপো‌রেশন নির্বাচন কর‌তে গি‌য়ে কিছু অন‌ভি‌প্রেত ঘটনা হয়‌তো ঘ‌টে যায়। কোন প্রকার উস্কানীতে উত‌্যক্ত না হ‌য়ে ধর্য‌্য ধারণ ক‌রে নির্বাচন কার্যক্রম প‌রিচালনার জন‌্য সকল‌কে ধন‌্যবাদ জানায়। আগামী‌তেও অসীম ধর্য‌্য নি‌য়ে নির্বাচনী ইশ‌তেহার বাস্তবায়‌নে নেতাকর্মীরা পা‌শে থাক‌বেন ব‌লে আ‌মি আশাবাদী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক ও সা‌বেক মেয়র আ জ ম না‌ছির উ‌দ্দিন, সহ সভাপ‌তি এড‌ভো‌কেট ইব্রা‌হিম হো‌সেন বাবুল, আলতাফ হো‌সেন বাচ্চু, সাংগঠ‌নিক নোমান আল মাহমুদ, শ‌ফিক আদনান, প্রচার সম্পাদক শ‌ফিকুল ইসলাম ফারুক, ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক শম‌সের আলী, সাংস্কৃ‌তিক সম্পাদক আবু তা‌হের, তথ‌্য ও প্রযু‌ক্তি বিষয়ক সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও প‌রি‌বেশ বিষয়ক সম্পাদক ম‌শিউর রহমানসহ মহানগর, থানা, ওয়ার্ড ও ইউ‌নিট আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসহ‌যোগী সংগঠ‌নের নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ, রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও এনামুল হক দানুর কমিটিতে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

১৯৫৩ সালের ৩১ মে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার অন্তর্গত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জমিদার বংশ বহদ্দার পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।রেজাউল করিম চৌধুরীর পিতা মরহুম হারুন-অর-রশীদ চৌধুরী ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। তার দাদা ছালেহ আহমদ ছিলেন ইংরেজশাসিত ভারত এবং পাকিস্তান আমলে চট্টগ্রামের একজন খ্যাতিমান আইনজীবী ও চট্টগ্রামে ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত বিলুপ্ত কমরেড ব্যাংকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন এবং তারপর আইন বিষয়ে পড়াশোনার জন্যে ভর্তি হন। কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর হত্যার প্রতিবাদে সামরিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ লড়াইয়ে নেমে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারেননি।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রের জনক। স্ত্রী সেলিনা আক্তার গৃহিণী, মেয়ে তানজিনা শারমিন নিপুন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আরেক কন্যা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ছোট ছেলে ইমরান রেজা চৌধুরী কেমিক্যাল প্রকৌশল বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ