বিএনএ, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ভালুকায় ঝোপ থেকে মিনু আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের সৎ বাবাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টাকা না দেয়ায় সৎ মেয়েকে শ্বাস রোধে হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রাখে বাবা শফিকুল ইসলাম।
শনিবার (২৫ জুন) রাত ১১ টার দিকে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত ২৪ জুন দিবাগত রাতে কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন শনিবার (২৫ জুন) বিকালে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপর আসামী রিপন মিয়াকে একই দিন (শনিবার) বিকালে ভালুকার জমিরদিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিপন মিয়াকে রোববার (২৬ জুন) দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ওসি কামাল হোসেন বলেন, শফিকুল ইসলামের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তবে সে ভালুকায় বসবাস করতেন। বেশ কয়েক বছর আগে সৎ মেয়ে মিনুকে মেনে নিয়ে মাহমুদা আক্তারকে বিয়ে করেন শফিকুল। মাহমুদা আক্তার গার্মেন্টসে চাকরী করতেন ও রফিকুল ভাঙারীর ব্যবসা করতেন। গার্মেন্টসে অনেক দিন কাজ করায় মাহমুদা আক্তারের এক লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা জমা হয়। ওই টাকা দিয়ে মেয়ে মিনুর নামে ডিপোজিট করার পরিকল্পনা করে মা মাহমুদা। বিষয়টি শফিকুল জানতে পেরে মাহমুদা আক্তারের কাছে টাকা চান। তবে, তিনি টাকা দিকে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল তার বন্ধু রিপনকে নিয়ে সৎ মেয়ে মিনুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৮ জুন মা মাহমুদা আক্তার বাড়িতে না থাকায় রাতে ঘুমন্ত মিতুকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেন। পরদিন আবারও রাতে ওই মরদেহ একই এলাকার কারখানায় বাউন্ডারির ভিতর মাটি গর্ত করে পুঁতে রাখেন।
এদিকে, মিনুকে চাপা দেওয়া মাটি বৃষ্টির পানিতে সরে গিয়ে তার পা বের হয়ে আসে। এভাবে ১৭ দিন পার হলে মরদেহ পুরোটাই ভেসে উঠে। পরে স্থানীয়রা বৃহষ্পতিবার (২৩ জুন) সকালে মরদেহ দেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে ভালুকা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলার প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রিপন মিয়াকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিএনএ/ হামিমুর রহমান, ওজি