বিএনএ, বিশ্বডেস্ক: ভারতের নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার বাংলাদেশ সীমান্ত-সংলগ্ন প্রতাপপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ হালদার। তিনি সুকুমার রায়ের ‘সৎপাত্র’ কবিতার গঙ্গারামকেও হার মানিয়েছে। দীর্ঘ ২২ বারের চেষ্টায় প্রদীপ ৫২ বছর বয়সেও দমে না গিয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েই ছেড়েছেন।
প্রদীপের এমন সাফল্যের খবর রীতিমতো প্রতাপপুরের আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। এর ফলে এতদিন প্রদীপের ডাক্তারি পড়া ও ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে যারা মশকরা করতেন তারাও এখন প্রদীপকে কুর্নিশ করতে বাধ্য হচ্ছে।
অতি দরিদ্র পরিবারের ছেলে প্রদীপবাবু মাধ্যমিকের পরে পড়তে পারেননি। কাজে জুতে যেতে হয়েছিল। তার পরে বিয়ে করেছেন। সন্তানও হয়েছে। তবে মনের গোপন কুঠুরিতে আরও পড়াশোনা করা এবং ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন লালন করে গিয়েছেন নিরন্তর। বহু লড়াই করে ২০০০ সালে বিজ্ঞান শাখায় উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। তার পরে জয়েন্ট এন্ট্রান্সে বসার জন্য কিছু বই কিনে শুরু করেন পড়া। এমবিবিএসে সুযোগ না পেলেও ভর্তি হয়েছেন হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজে।
প্রদীপ বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে অনেকেই ‘এমবিবিএস ডাক্তার যাচ্ছে’ বলে হাসাহাসি করত।’ এমনকি আমার স্ত্রী বাসন্তী হালদারও মনে করতেন, এ সব মাথা খারাপের লক্ষণ। বলতেন, “ছেলেমেয়ের পেটে ভাত দেওয়ার বালাই নেই, উনি ডাক্তার হবেন!’’
৫২ বছর বয়সী প্রদীপ ২০২১ সালে নিট পরীক্ষায় বসেন এবং সকলকে চমকে দিয়ে পাশ করেন তিনি। তার র্যাঙ্ক হয় ৩,৪৬,২৩৪তম। এমবিবিএস পড়ার সুযোগ না পেলেও সুযোগ পান কলকাতা হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।
বিএনএ/এমএফ