বিএনএ, রাবি: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের নিকট লেখা খোলা চিঠিটি প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান চিঠিতে বলেন, আপনি বিশ্বের অনেক নামি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। এটি আমাদের জন্য সম্মানের এবং গর্বের। তবে সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনোটিতেই দলীয় রাজনীতি নেই। তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অন্যতম দাবি ছিল শিক্ষাঙ্গনে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। আপনি চাইলে একটি নির্বাহী আদেশে সেটি করতে পারেন। কিন্তু এখন অবধি সেটি ঘটেনি।
“আপনি আদালতে লোহার খাঁচার মধ্যে নিজেও দাঁড়িয়েছেন এবং এর বিরোধিতা করে আপনি এটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। কিন্তু আদালতে এখনও লোহার খাঁচায় আসামীকে দাঁড়াতে হচ্ছে।”— চিঠিতে বলেন রাবি অধ্যাপক।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান লিখেন, এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে যা স্পষ্টভাবে বৈষম্য তৈরি করছে। পরবর্তীতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন।
সংবিধান সংস্কার কমিটিতে খ্যাতিমান এবং দেশবরেণ্য আইনজীবী শাহদীন মালিকের স্থলে অধ্যাপক আলী রিয়াজকে দায়িত্ব দেয়া অনেকের নিকট যৌক্তিক মনে হয়নি উল্লেখ করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান লিখেছেন, জনাব শাহদীন মালিক একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং দক্ষ সংবিধান বিশেষজ্ঞ তার এই সরে যাওয়া জনগণের মনে সংশয় তৈরি করেছে।
এছাড়া তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। তার একটি কথার জন্য এবং সেজন্য তার দুঃখপ্রকাশ করার পরেও তাকে তার পদ থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ায় অনেক মানুষ আহত হয়েছেন।
অন্তর্বর্তীকালীন এ সরকারে এনজিও ও বিশেষ অঞ্চলকে প্রাধান্য দেওয়া নিয়ে উঠা আলোচনা-সমালোচনার প্রসঙ্গে রাবির অর্থনীতি বিভাগের এ অধ্যাপক খোলা চিঠিতে বলেন, “যদিও অনেকে মনে করছেন আপনার সরকার কিছুটা এনজিও অভিজ্ঞতা নির্ভর এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য বিশেষ কিছু অঞ্চলের প্রতি ঝোঁক বেশি, তবে আমি তাতে সমস্যা মনে করছিনা, কাজ বলে কথা।”
প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটা বিভিন্ন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে অনলাইন-অফলাইনে বরাবরই সরব থাকেন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও ছিলেন সক্রিয়। এদিকে ক্যাম্পাসগুলোতে সকল প্রকার দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে সোচ্চার রয়েছেন রাবির এ অধ্যাপক।
বিএনএনিউজ/ সাকিব/ বিএম/এইচমুন্নী